জালিয়াতির অভিযোগে যুব মহিলা লীগের নেত্রীসহ তিনজনকে শোকজ

আদালতে জাল ওকালতনামা ও জাল স্ট্যাম্প দাখিলের অভিযোগে জেলা যুব মহিলা লীগের আহ্বায়িকা অ্যাডভোকেট সেলিনা আক্তার পিয়াসহ তিন আইনজীবীকে কারণ দর্শানোর (শোকজ) নোটিশ দিতে নির্দেশনা দিয়েছেন খুলনা মুখ্য বিচারিক হাকিম।
খুলনার মুখ্য বিচারিক হাকিম মো. আবুল বাশার মিঞা গত বৃহস্পতিবার স্মারক নম্বর ১১৮ এর এক আদেশনামায় বলেন যে, মামলার বাদীপক্ষের নিয়োজিত আইনজীবী জনাব সেলিনা আক্তার পিয়া, এস এম আরিফুর রহমান ও রোজালিন সরকারের সম্পাদিত ৩৫৬৯১ নম্বর ওকালতনামা ও তাঁর সঙ্গে ১০ টাকা মূল্যের দাতব্য তহবিলের স্ট্যাম্প পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, এটার সঙ্গে অন্যান্য মামলায় দেওয়া ওকালতনামার একই স্ট্যাম্পের যথেষ্ট গড়মিল রয়েছে।
বিষয়টি আদালতে উপস্থিত অন্য আইনজীবীদের জানানো হলে তাঁরা আদালতকে জানান যে, এই মামলায় বাদীপক্ষের দেওয়া ওকালতনামা ও স্ট্যাম্প সম্পূর্ণ জাল।
পরে আদালত এই তিন আইনজীবীর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার আদেশ দেন। এ ছাড়া খুলনা আইনজীবী সমিতি কর্তৃপক্ষকে আদেশ পাওয়ার তিন দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়ার নির্দেশ দেন।
এ ব্যাপারে জেলা যুব মহিলা লীগের আহ্বায়িকা অ্যাডভোকেট সেলিনা আক্তার পিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি তাঁর চেম্বারের জুনিয়র আইনজীবী এসএম আরিফুর রহমানকে দিয়ে এই ওকালতনামা ও স্ট্যাম্প সংগ্রহ করেছিলেন বলে জানান। তিনি নিজে জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত নন দাবি করে আগামীকাল রোববার এ ব্যাপারে আদালতকে জানানো হবে বলে জানান ।
দলের একটি গোষ্ঠী তাঁর নামে অপবাদ ছড়াচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন সেলিনা আক্তার পিয়া। এ সময় পত্রপত্রিকায় নাম এলে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে হুমকি দেন তিনি।
এর আগেও খুলনায় ওকালতনামা ও জামিননামা জালিয়াতির অভিযোগে তিন আইনজীবী এসএম আরিফুর রহমান, জি এম শাহাদাৎ হোসেন ও বিউটি আক্তারের সদস্য পদ সাময়িক বাতিল করা হয়। খুলনা জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মশিউর রহমান নান্নু এই তিনজনসহ চারজনের নামে মামলাও দায়ের করেন।
এদিকে এই জালিয়াতি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) টিপু সুলতানের সঙ্গে যোগাযোগ করলে, তিনি আটক এসএম আরিফুর রহমান, জি এম শাহাদাৎ হোসেন ও বিউটি আক্তারকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদের কথা জানান। এ ছাড়াও নিজেরা লাভবান হতে এই ওকালতনামা ও স্ট্যাম্প ছাপিয়ে আইনজীবীদের কাছে কম দামে বিক্রি করতেন বলে তাঁরা স্বীকার করেছেন বলেও দাবি করেন এই কর্মকর্তা।
এ ব্যাপারে অ্যাডভোকেট মশিউর রহমান নান্নুর সঙ্গে যোগাযোগ করলে জানান, আদালত থেকে অ্যাডভোকেট সেলিনা আক্তার পিয়াকে শোকজ করার নির্দেশ পেয়েছেন। আগামীকাল রোববার বিষয়টি নিয়ে সমিতির বৈঠক রয়েছে।
দীর্ঘদিন ধরেই একটি জালিয়াতি চক্র বিপুল পরিমাণ টাকা লোপাট করছে বলেও জানান মশিউর রহমান।