জি এম কাদের ও মুজিবুল হক চুন্নুর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও ডাকাতির মামলা

মনোনয়ন বাণিজ্য, চাঁদাবাজি ও ডাকাতির অভিযোগ এনে জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জি এম কাদের, মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছে। ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে গত শনিবার (১৭ মে) জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সদস্য ও মানবাধিকারকর্মী নাজমিন সুলতানা তুলি এই মামলা করেন।
আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে অভিযোগটি আগামী ২৬ মে আদেশের জন্য অপেক্ষমান রাখেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদীপক্ষের আইনজীবী এ বি এম জোবায়ের।
মামলার অপর আসামিরা হলেন— সাবেক ডিআইজি ও ডিবি প্রধান হারুন অর রশিদ, জাপার অতিরিক্ত মহাসচিব রেজাউল ইসলাম, জাপার কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নেওয়াজ আলী ভূইয়া, জিএম কাদেরের স্ত্রী শেরিফা কাদের, সাবেক ডিসি আকরাম, সাবেক এডিসি নাজমুল ও এসআই পবিত্র সরকার।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, বাদী জাপার কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সদস্য এবং মানবাধিকারকর্মী নাজমিন সুলতানা তুলি। অপরপক্ষে আসামিরা বিগত আওয়ামী সরকারের সাবেক এমপি, মন্ত্রী ও পুলিশ প্রশাসনের সাবেক কর্মকর্তা। তারা দুর্নীতিবাজ ও জাতীয় পার্টির বিভিন্ন দায়িত্বশীল জায়গায় থেকে পদ বাণিজ্য ও মনোনয়ন বাণিজ্যের মতো অপরাধে লিপ্ত। ১ নং থেকে ৬ নং আসামিগণ বাদীর ওপর নানাভাবে নির্যাতনের জন্য হুকুমদাতা এবং বাকিরা মাঠ পর্যায়ে হুকুম বাস্তবায়ন করেন।
অভিযোগে বাদী আরও উল্লেখ করেন যে, আমি জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হিসেবে যোগদান করার পর থেকেই সংগঠনের প্রচার ও প্রসারের জন্য দেশব্যাপী সাংগঠনিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ শুরু করি। আমার নিজস্ব বাগ্মিতা ও কর্মদক্ষতায় অল্প সময়ের মাঝেই জনপ্রিয় হয়ে উঠি। যা ১নং আসামি ভালোভাবে গ্রহণ করেননি এবং আমার কার্যক্রম সীমিত করার অপচেষ্টা করতে থাকেন। পরবর্তী সময়ে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে এলে তাদের দুর্নীতি, মনোনয়ন বাণিজ্যের মতো নানা অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা বাদিনীর সম্মুখে প্রকাশ পায়। ১নং আসামির প্রত্যক্ষ মদদে অন্য আসামিগণ ২০২৪ সালের ডামি নির্বাচনে মনোনয়ন বাণিজ্যে লিপ্ত হয় এবং বাদীকে মনোনয়ন দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ৫০ লাখ টাকা দাবি করে মেসেজ দেয়। এসব নিয়ে কেন্দ্রীয় কমিটির মিটিংয়ে বাদী প্রতিবাদ করলে এক উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় এবং তাতে দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল বৃদ্ধি পায়। বিশেষ করে অর্থের ঝনঝনানিতে দলের ত্যাগী ও পরিশ্রমী নেতা-কর্মীগণ ক্ষুব্ধ হয়ে বাদীসহ অনেকেই পদত্যাগ করেন। সেই দিকে ভ্রুক্ষেপ না করে ১নং থেকে ৬নং আসামিগণ বাদীর ওপর প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য পুলিশ প্রশাসনের কতিপয় দুর্নীতিবাজ সাবেক কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় এবং আরও অজ্ঞাতনামা ৪০/৫০ জন লোক সাথে নিয়ে ১০/১০/২০২৩ তারিখে রাত সাড়ে ৮টার দিকে বাদীর বাসার দরজা ভেঙে প্রবেশ করে বাসার আসবাবপত্র, ৭ ভরি স্বর্ণাংকার, নগদ ৩ লাখ ৬৫ হাজার টাকা গুরুত্বপূর্ণ কাগজ, মোবাইলফোন, ল্যাপটপসহ আসবাবপত্র নিয়ে যায়। বাদী এসব নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করার প্রস্তুতি নিলে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি প্রদান করে।
নাজমিন সুলতানা তুলি বলেন, আওয়ামী সরকারের পতন হলেও এখনো তারা বিভিন্নভাবে শক্তি সঞ্চয় করার চেষ্টায় লিপ্ত। আমি দীর্ঘদিন ট্রমায় ভুগেছি এবং সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্নের শিকার হয়েছি। যারা রাজনীতিকে কলুষিত করেছে আমি তাদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।