বরিশালে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ

বরিশালে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা শ্রমিক ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে পুলিশের সহকারী কমিশনারসহ (এসি) সাতজন কর্মকর্তা ও বেশ কয়েকজন শ্রমিক আহত হয়। এই ঘটনায় পুলিশ বাসদ বরিশাল জেলা শাখার সদস্য সচিব ও সিটি নির্বাচনের মেয়র প্রার্থী ডা. মনীষা চক্রবর্তীসহ ছয়জনকে আটক করেছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে বরিশাল জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সামনে এই ঘটনা ঘটে।
আটক অন্যরা হলেন বাসদ বরিশাল জেলা শাখার আহ্বায়ক ইমরান হাবিব রুমন, বরিশাল জেলা সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের অর্থ সম্পাদক নাসরিন আক্তার টুম্পা, জেলা শ্রমিক ফ্রন্টের অর্থ সম্পাদক মিঠুন চক্রবর্তী, সদস্য জাকির হোসেন ও নূর ইসলাম।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বরিশাল নগরীতে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা উচ্ছেদ বন্ধ করা ও অবিলম্বে লাইসেন্স দেওয়ার দাবিতে অশ্বিনী কুমার হলের সামনে মানববন্ধন করে ব্যাটারিচালিত রিকশা শ্রমিক-মালিক সংগ্রাম কমিটি। এর সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে বাসদের নেতাকর্মীরা। এরপর থালা-বাসন নিয়ে ভুখা মিছিল বের করেন শ্রমিকরা। মিছিলটি নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে বরিশাল সিটি করপোরেশনের সামনে গিয়ে অবস্থান নেয়। সেখানে নেতাকর্মীরা সিটি করপোরেশনে স্মারকলিপি দেন।
স্মারকলিপি প্রদান শেষে অটোরিকশা শ্রমিক ও বাসদের নেতাকর্মীরা বরিশাল জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সামনে অবস্থান নেয়। এ সময় পুলিশ তাদের স্থান ত্যাগ করতে বললে তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে পুলিশ অটোরিকশা শ্রমিকদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এতে উভয় পক্ষের ২০ জন আহত হয়।
পুলিশ সদস্যদের মধ্যে আহত হয়েছেন বরিশাল মহানগর পুলিশের কোতোয়ালি মডেল থানার সহকারী কমিশনার শাহনাজ পারভীন, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ মো. আওলাদ হোসেন, এসআই নজরুল ইসলাম, কনস্টেবল শারমিন, ইতি, সুরমা ও সাদিয়া। এ ছাড়াও রিকশাশ্রমিক ও বাসদের প্রায় ১৩ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
এই বিষয়ে সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের বরিশাল জেলা শাখার সভাপতি সন্তু মিত্র বলেন, গরিব রিকশা শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি আদায়ের লক্ষ্যে নগরীতে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। তবে পুলিশ এই শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বাধা সৃষ্টি করে আমাদের নেতাকর্মী ও রিকশা শ্রমিকদের ওপর লাঠিচার্জ করেছে। আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ মো. আওলাদ হোসেন জানান, প্রথমত এই কর্মসূচি করার জন্য তাদের কোনো পূর্বানুমতি ছিল না। তারপরও আমরা তাদের বাধা দেইনি। কথা ছিল তারা সিটি করপোরেশনে গিয়েই তাদের কর্মসূচি শেষ করবে। কিন্তু তারা সেখান থেকে নগরীর ব্যস্ততম সড়ক জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সামনে অবস্থান নেয়। তাদের সেখান থেকে সরে যেতে বলা হলে তারা আমাদের পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলা চালায়। তাই আত্মরক্ষার্থে পুলিশ লাঠিচার্জ করে।