‘নিহত আশরাফ নিরাপত্তা চেয়েছিলেন’

সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলার চিংড়িখালী বৈরাগীর চকের খাসজমি নিয়ে সংঘর্ষে নিহত আশরাফ মীর নিজের জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে পুলিশের সহায়তা চেয়েছিলেন বলে দাবি করেছেন তাঁর পুত্রবধূ।
আজ শুক্রবার সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে আশরাফ মীরের ছেলে হাসান মীরের স্ত্রী পারভিন সুলতানা দাবি করেন, ‘আমার শ্বশুর নিরাপত্তা চেয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আবেদন করেছিলেন। তাতে বেসামরিক বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন সুপারিশ করেছিলেন। ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হলেও তাঁকে জীবন দিতে হলো।’
তবে পুলিশ বলছে, তাদের বিষয়টি জানা নেই।
অভিযোগ রয়েছে, গত ২৪ আগস্ট ভোরে খাসজমি দখলের সময় দুইপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে আশরাফ মীর, তাঁর শ্যালক ইসহাক গাজী ও সহযোগী আবুবকরকে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেয় প্রতিপক্ষ। কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পর আশরাফ ও ইসহাক মারা যান। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে দুটি মামলা করেছে। এসব মামলায় ৫০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ১২ জনকে। ঘটনার পর থেকে গ্রেপ্তার আতঙ্কে ওই এলাকার লোকজন বাড়ি ছেড়ে গেছে।
আশরাফ মীরের পুত্রবধূ পারভীন সুলতানা বলেন, নিরাপত্তা চাওয়ার পর পুলিশ সাহায্য করা দূরে থাকুক, আশরাফ মীর ও ইসহাক পাঁড়ের প্রতি নির্দয় আচরণ করেছে। এমনকি জোড়া খুনের মামলায় পরিবারের সদস্য হাবিব, শহিদুল ইসলাম, তাইজুল, মেহেরুল ইসলাম, ইসরাইলসহ বেশ কয়েকজনকে আসামি করেছে।
পারভীন সুলতানা আরো দাবি করেন, ঘটনার দিন আশরাফ মীর নিরস্ত্র ছিলেন। তাঁকে লতাখালী সাঁকো এবং সুন্দরখালী ঘের এলাকা থেকে মারধর করতে করতে নিয়ে যাওয়া হয়।
সে সময় মোবাইলে তোলা একটি ভিডিওচিত্র দেখিয়ে পারভীন সুলতানা বলেন, সে সময় আশরাফ মীর নিরস্ত্র ছিলেন। ছবিতে বরেয়া গ্রামের হাফিজের ছেলে ফারুক, বয়ারডাঙ্গার আনসার, গোলাম হোসেন, আবুল, নুবা এবং আবুল হোসেনকে দেখা গেছে। তারা আশরাফকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করছে।
অবিলম্বে হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের পাশাপাশি পারভীন পরিবারের লোকজনকে মামলা থেকে অব্যাহতির দাবি জানান। তিনি জানান, দশ বছরেরও বেশি সময় ধরে আশরাফ মীর চিংড়িখালী বৈরাগীর চকে বসবাস করে আসছিলেন। পরে তাঁকেসহ ১২০টি পরিবারকে সেখান থেকে উচ্ছেদ করা হয়। এর পেছনে ছিলেন করিম পাঁড়, আবুল হোসেনসহ কয়েকজন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও কালীগঞ্জ থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) সাগর আলী এনটিভি অনলাইনকে জানান, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে নিরাপত্তা চেয়ে আশরাফ মীরের কোনো আবেদন সম্পর্কে তিনি জানেন না। এ মামলায় ১২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।