তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপরে, ২৫ গ্রাম পানিবন্দি

উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি নীলফামারীতে বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর ফলে তিস্তা অববাহিকার ২৫টি গ্রামের প্রায় পাঁচ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) ডালিয়া ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান এনটিভি অনলাইনকে জানান, গতকাল শুক্রবার রাত থেকে তিস্তা নদীতে পানি বাড়তে থাকে। সকাল থেকে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। তবে বিকেল ৩টার পর থেকে পানি কিছুটা কমে বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানির চাপ নিয়ন্ত্রণে ব্যারাজের সবকটি গেট খুলে রাখা হয়েছে।
এলাকাবাসী জানায়, উজানের প্রচণ্ড ঢলের কারণে তিস্তা ব্যারাজের ২০ কিলোমিটার উজানে তিস্তা নদী দুটি চ্যানেলে রূপান্তর হয়েছে। মূল চ্যানেল কালীগঞ্জ জিরো পয়েন্ট ছাড়াও টেপাখড়িবাড়ী ও চরখড়িবাড়ী দিয়ে তিস্তা নতুন চ্যানেলে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। এতে করে তিস্তার অববাহিকার ২৫টি গ্রামে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে।
পাশাপাশি নদীর বাম ও ডান তীরের বাঁধ ঘেঁষে পানিপ্রবাহ হওয়ায় বাঁধের হার্ডপয়েন্ট ঝুঁকির মুখে পড়েছে। তিস্তার পানি বেড়ে যাওয়ার কারণে নীলফামারীর ডিমলা ও জলঢাকা উপজেলা এবং লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা ও কালীগঞ্জ উপজেলার হাজার হাজার মানুষের ঘরবাড়িতে বানের পানি প্রবেশ করেছে। এসব এলাকার পরিবারগুলোকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
খালিশা চাপানি ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডে গ্রামের প্রতিটি ঘরে হাঁটু সমান পানি উঠেছে। পশ্চিম বাইশপুকুর থেকে পূর্ব বাইশপুকুরের চার কিলোমিটার বালুর বাঁধটি চরম হুমকির মুখে পড়েছে। বাঁধটি ভেঙে গেলে পূর্ব বাইশপুকুর, পশ্চিম বাইশপুকুর, সতিঘাট, ছাতুনামা, ভেন্ডাবাড়ীসহ ১০টি গ্রামের শত শত বাড়ি ও আবাদি জমি নদীগর্ভে বিলীন হবে।
পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল লতিফ খান বলেন, তাঁর এলাকার পাঁচ শতাধিক ঘরবাড়িতে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে।
খগাখড়িবাড়ী ইউপির চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম লিখন জানান, কিছামত ছাতনাই চরের ২০০ পরিবারের বসতভিটায় বন্যার পানি প্রবেশ করেছে।
টেপাখড়িবাড়ী ইউপির চেয়ারম্যান শাহীন বলেন, চরখড়িবাড়ী গ্রামের তিন শতাধিক পরিবারের বসতভিটায় বন্যার পানি প্রবেশ করেছে।