রাত থেকে বন্ধ প্রচারণা ও যানবাহনে নিষেধাজ্ঞা

খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) নির্বাচনে প্রচার-প্রচারণার আজই শেষ দিন। আজ রোববার দিবাগত রাত ১২টায় শেষ হচ্ছে প্রচারের কাজ। একই সময় থেকে নগরীতে শুরু হবে যান চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা। নগরীতে দুপুর থেকে নামানো হয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যদের।
আগামী ১৫ মে মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে কেসিসি নির্বাচনে ভোটগ্রহণ চলবে। নির্বাচন কমিশন (ইসি) জানিয়েছে, এরইমধ্যে নির্বাচনের যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।
যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা
আজ রাত থেকেই খুলনা নগরীতে যান্ত্রিক যান চলাচলের উপর এক নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। রোববার এই বিজ্ঞপ্তিটি তথ্য অধিদপ্তর।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, কেসিসি নির্বাচন মোটরযান অধ্যাদেশ ১৯৮৩ এর ৮৮ ধারার বিধান বলে খুলনা জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো.আমিন উল আহসান কেসিসি এলাকায় কতিপয় যান্ত্রিক যানবাহন চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন।
নিষেধাজ্ঞা অনুযায়ী, ১৪মে রাত ১২টা থেকে ১৫ মে রাত ১২টা পর্যন্ত ট্যাক্সিক্যাব, বেবিট্যাক্সি, অটোরিক্সা, মাইক্রোবাস, জিপ, পিকআপ, কার, বাস, ট্রাক এবং টেম্পো চলাচল করতে পারবে না।
এছাড়া, আজ রোববার রাত ১২টা থেকে নির্বাচনের পরদিন ১৬ মে সকাল ছয়টা পর্যন্ত সকল ধরণের মোটর সাইকেল চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জানানো হয়।
তবে নির্বাচনী কাজে ব্যবহৃত যানবাহন,জরুরি চিকিৎসা, ফায়ার সার্ভিস ও বিদ্যুৎসহ অন্যান্য অত্যাবশ্যকীয় সেবা প্রদান কাজে ব্যবহৃত যানবাহন এ নিষেধাজ্ঞার আওতাভূক্ত হবে না বলেও জানানো হয়।
মাঠে বিজিবি
কেসিসি নির্বাচন উপলক্ষে রোববার থেকে মাঠে বিজিবি নামানো হয়েছে। বার্তাসংস্থা বাসস জানিয়েছে, নির্বাচনে সাড়ে ৯ হাজার পুলিশ, বিজিবি, এপি ব্যাটেলিয়ান, আনসার-ভিডিপি সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন। পাশাপাশি থাকবে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ানের (র্যাব) ৩২টি টহল টিম এবং ৪টি স্ট্রাইকিং ফোর্স। একই সঙ্গে নির্বাচনের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা ও সিটি নির্বাচনের আচরণ বিধিমালা প্রতিপালনের লক্ষ্যে ৩১ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে মাঠে নামানো হয়েছে।
‘শান্তিপূর্ণ পরিবেশ রয়েছে’
খুলনার জেলা প্রশাসক মো. আমিন উল আহসান বলেন, ‘সিটি করপোরেশন নির্বাচনে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ রয়েছে।’তিনি আরো বলেন, ‘নির্বাচনে ভোট কেন্দ্র ও নির্বাচনী এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা এবং নির্বাচনী আচরণ বিধিমালা প্রতিপালন নিশ্চিতকরণে ৩১জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
র্যাব-৬ এর অধিনায়ক খোন্দকার রফিকুল ইসলাম জানান, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা মোতাবেক নির্বাচনে র্যাবের ৩২টি টিম দায়িত্ব পালন করবে। যার প্রতিটি দলে ৮জন সদস্য থাকবে। তিনি বলেন, ‘এছাড়া ৪টি স্ট্রাইকিং ফোর্স থাকবে। এ টিমে ১০ জন করে থাকবে।’
খুলনা মহানগর পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত উপ-কমিশনার সোনালী সেন বলেন, ‘এ নির্বাচনে সাড়ে ৯ হাজার পুলিশ, বিজিবি, এপি ব্যাটালিয়ান ও আনসার সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবেন। এর মধ্যে পুলিশের পাশাপাশি ১৬ প্লাটুন বিজিবি, সাড়ে ৪ হাজার আনসার-ভিডিপি সদস্য থাকবে। ৯শ অঙ্গীভূত আনসার-ভিডিপি সদস্য থাকবে। তিনি বলেন, ‘প্রত্যেক ম্যাজিস্ট্রেটের টিমের সঙ্গে একটি করে পুলিশের টিম থাকবে। ৮টি মোটর সাইকেল টিম এবং ১১টি পিকেট টিম দায়িত্ব পালন করবেন।’
মেয়র পদে ৫, কাউন্সিলর পদে শতাধিক
রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, খুলনা সিটি করপোরেশনে প্রথমবারের মতো মেয়র পদে দলীয় প্রতীকে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এবার মেয়র পদে পাঁচজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন। তাঁরা হলেন, আওয়ামী লীগের তালুকদার আব্দুল খালেক, বিএনপির নজরুল ইসলাম মঞ্জু, জাতীয় পার্টির শফিকুর রহমান মুশফিক, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মাওলানা মুজ্জাম্মিল হক ও সিপিবি মনোনীত প্রার্থী মোঃ মিজানুর রহমান বাবু।
এছাড়া নগরীর ৩১টি সাধারণ ওয়ার্ডে ১৪৮ জন এবং ১০টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ৩৯ জন কাউন্সিলর প্রার্থী প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন। খুলনা সিটিতে মোট ভোটার ৪ লাখ ৯৩ হাজার ৯৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ৪৮ হাজার ৯৮৬ ও নারী ২ লাখ ৪৪ হাজার ১০৭ জন। ভোটকেন্দ্র আছে মোট এক হাজার ১৭৮টি। প্রিজাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ও পোলিং অফিসার আছে চার হাজার ৯৭২ জন।
কেসিসি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. ইউনুচ আলী বাসসকে জানান, সিটি করপোরেশনের নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করতে কমিশনের সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। এরইমধ্যে নির্বাচনের ভোটগ্রহণের জন্য ব্যালট পেপার, সিল, কালিসহ নির্বাচনী মালামাল খুলনায় এসেছে।