মাথায় মল ঢেলে মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষককে লাঞ্ছনা

মাদ্রাসার জমি দখলে বাধা দেওয়ায় এবং ব্যবস্থাপনা কমিটিতে জায়গা না পেয়ে এক প্রধান শিক্ষককে প্রকাশ্যে লাঞ্ছিত করা হয়েছে। সেই সঙ্গে তাঁর মাথায় মল ঢেলে দিয়ে তা ভিডিও করে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়েছে।
বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার রঙ্গশ্রী ইউনিয়নে গত শুক্রবার সকালে এ ঘটনা ঘটে। আজ রোববার ঘটনার ভিডিওটি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে শুরু হয় তীব্র সমালোচনা।
এই ঘটনায় মিঞ্জু হাওলাদার নামের একজনকে আটক করেছে পুলিশ। ঘটনার শিকার কাঁঠালিয়া ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক মো. আবু হানিফ বাদী হয়ে আটজনকে আসামি করে মামলা করেছেন।
আবু হানিফ বলেন, ‘১১ (মে) তারিখ সকালে ফজরের নামাজ পরে ৭টার দিকে হাঁটতে বের হয়েছিলাম। তখন জাহাঙ্গীর মৃধা ও মাসুম সরদারের নেতৃত্বে অনেকে মিলে আমাকে রাস্তায় আটক করে লাঞ্ছিত করে। সামাজিকভাবে আমাকে অসম্মানিত করার জন্য ওরা এই ঘটনা ঘটিয়েছে।’
জাহাঙ্গীর মৃধা স্থানীয় জাতীয় পার্টির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। ওই এলাকা পড়েছে বরিশাল-৬ আসনের মধ্যে। জাতীয় পার্টির মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদারের স্ত্রী রত্না আমিন হাওলাদার ২০১৪ সালে সেখানে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সাংসদ নির্বাচিত হন।
ফেসবুকে ছড়িয়ে পরা ভিডিওতে দেখা গেছে, আবু হানিফ রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন। কয়েকজন তাঁর পথ রোধ করে। এরপর একজন তাঁর মাথার টুপি ও কাঁধের রুমাল খুলে নেয়। তখন আবু হানিফ তাঁর মোবাইল ফোন বের করলে একজন এসে ফোনটি কেড়ে নেয়। অন্য আরেকজন তাঁর হাত চেপে ধরে রাখে। তারপর পলিথিনে পেঁচানো একটা হাঁড়ি বের করে সেখান থেকে মলমূত্র ঢেলে দেয় হানিফের মাথায়। এ সময় তাঁকে হুমকি দিয়ে বলা হয়, ‘এইয়া নিয়া যদি বাড়াবাড়ি করো তাহলে তোর জীবন শেষ হইয়া যাইবে।’ এরপর তাঁকে গালাগালি করে স্থান ত্যাগ করতে বলা হয়।’
এই ঘটনায় বাদী হয়ে বাকেরগঞ্জ থানায় আটজনকে আসামি করে মামলা করেছেন আবু হানিফ।
আবু হানিফ বলেন, তারা মাদ্রাসার জমি দখল করার চেষ্টা করছিলো। এই চক্রটি নানাভাবে বিনা অনুমতিতে মাদ্রাসার জমিতে বিভিন্ন কার্যক্রম করে আসছিল। আমি এতে বাধা দিই। এ নিয়ে মামলাও চলছে। আমি মামলার বাদী। এ কারণে ওরা আমার ওপর ক্ষিপ্ত। সেই সাথে মাদ্রাসার পরিচালনা কমিটির সভাপতি পদেও এই দলের লোক জাহাঙ্গীর জায়গা পায়নি। সভাপতি হয়েছেন এখানকার সংসদ সদস্যের মনোনীত ব্যক্তি। এসব করণে ওরা ক্ষেপে আমাকে নির্যাতন করেছে।
এ বিষয়ে বাকেরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদুজ্জামান জানান, মামলা দায়েরের পর একজনকে আটক করা হয়েছে। বাকিদের আটকের চেষ্টা চলছে। তবে তদন্তের স্বার্থে মামলার বিবাদীদের নাম বলতে রাজি হননি এই পুলিশ কমর্কর্তা।