বরিশাল মহানগরে উচ্ছেদ অভিযান, ব্যবসায়ীদের ক্ষোভ

বরিশাল মহানগরের বাণিজ্যিক এলাকায় উচ্ছেদ অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। এ সময় তারা বুলডোজার দিয়ে শতাধিক বিপণিবিতানের সাইনবোর্ড ভাঙচুর করে।
আজ সোমবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত নগরীর চকবাজার, গির্জা মহল্লা ও কাঠপট্টি এলাকায় এই অভিযান চালায় পুলিশ।
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, উচ্ছেদ অভিযানের নামে তাদের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সাইনবোর্ড ভেঙে ফেলা হয়েছে। তারা ফুটপাত খালি রেখে ব্যবসা পরিচালনা করলেও অহেতুক তাদের হয়রানি করা হচ্ছে। অভিযানের পর ক্ষুব্ধ ব্যবসায়ীরা প্রায় পাঁচ ঘণ্টা বিপণিবিতান বন্ধ রাখে।
বরিশাল মহানগর দোকান কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি স্বপন দত্ত জানান, গতকাল রোববার রাত ৮টার দিকে বরিশাল মহানগর পুলিশের (বিএমপি) পক্ষ থেকে মাইকিং করা হয় যে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সামনে থাকা ফুটপাত যেন দখলমুক্ত করা হয়। সে নির্দেশনা অনুযায়ী সকালে উত্তর চকবাজার ও কাঠপট্টি এলাকার ব্যবসায়ীরা ফুটপাত দখলমুক্ত রেখেই দৈনন্দিন কার্যক্রম শুরু করে। সোমবার কোনো দোকানের সামনে ভ্যানগাড়ির ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদেরও থাকতে দেওয়া হয়নি। কিন্তু সকাল থেকে কোতোয়ালি থানা পুলিশ অভিযানে এসে ফুটপাত দখলমুক্ত করার পাশাপাশি দোকানের ওপরের অংশে থাকা সাইনবোর্ড ভাঙচুর করে। অনেকে এ সময় প্রতিবাদ জানিয়েছিল। তবে কোনো লাভ হয়নি। পরে ব্যবসায়ীরা দোকানপাট বন্ধ করে দেয়।
নগরীর চকবাজার এলাকার ব্যবসায়ী দিলীপ সাহা জানান, ফুটপাত দখলমুক্ত করার নামে পুলিশের অভিযানে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও প্রতিষ্ঠানের ওপরে থাকা সাইনবোর্ড ভাঙচুর করা হয়। প্রতিবাদ করে কোনো লাভ হয়নি। তাদের সঙ্গে বরিশাল সিটি করপোরেশনের কয়েকজন কর্মকর্তাও উপস্থিত ছিলেন।
দিলীপ আরো জানান, চকবাজারের রাস্তা অনেকটাই সংকুচিত ছিল। সাবেক মেয়র শওকত হোসেন হিরণের সময় ব্যবসায়ী ও ভবন মালিকরা মিলে করপোরেশনকে জায়গা দিয়ে রাস্তা প্রশস্ত ও ফুটপাত নির্মাণে সহায়তা করে। তারপরও যদি আমরা অবৈধ দখল করে থাকি তবে সাতদিন আগে নোটিশ দিত, আমরা সরিয়ে নিতাম। কোনো নোটিশ ছাড়াই এই অভিযানে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে আমাদের ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়েছে। তারপর দক্ষিণ চকবাজারে জেলা পরিষদের একটি মার্কেট রয়েছে যা সড়কের ওপর নির্মিত। আর সেখানকার সব সাইনবোর্ড রাস্তা দখল করে থাকলেও সেখানে কোনো অভিযান চালানো হয়নি।
চকবাজার ব্যবসায়ী সমিতির নেতা মৃণাল কান্তি সাহা জানান, ফুটপাত দখলমুক্ত করার অভিযানের সময় ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সামনের বেশ কিছু ছোট বড় সাইনবোর্ড ভেঙে ফেলা হয়। ফুটপাত দখলমুক্ত করার বিষয়ে কোনো অভিযোগ নেই ব্যবসায়ীদের। তবে প্রতিষ্ঠানের সাইনবোর্ড ভাঙচুর করায় ব্যবসায়ীরা ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তিনি বলেন, ঈদের আগে এই ধরনের অভিযানে আতঙ্কিত হয়ে ব্যবসায়ীরা দোকানপাট বন্ধ করে দিয়েছেন।
কোতোয়ালি মডেল থানার সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার শাহানাজ পারভীন বলেন, চকবাজার, গির্জা মহল্লা ও কাঠপট্টি এলাকায় রোববার মাইকিং করা হয়েছে। এ ছাড়া ফুটপাতে মলম পার্টির উপদ্রব বেড়ে যাওয়ায় এই অভিযান চালানো হয়েছে। সারা দেশে এই অভিযান চলছে। আমরা উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে এই অভিযান চালাচ্ছি না। আমাদের এই অভিযানে সিটি করপোরেশন ও জেলা প্রশাসন সহায়তা করেছে।