বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদের ৪৪তম শাহাদাতবার্ষিকী পালিত

যথাযোগ্য মর্যাদায় আজ শনিবার সকালে বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখের ৪৪তম শাহাদাতবার্ষিকী পালিত হয়েছে যশোরের শার্শা উপজেলার কাশিপুর সীমান্তে। নূর মোহাম্মদের সমাধিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করা হয়। দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভা হয়। রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় গার্ড অব অনার দিয়েছে বিজিবি, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, উপজেলা প্রশাসন ও স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রীরা। এ সময় বীরশ্রেষ্ঠের পরিবারের সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন।
গার্ড অব অনারে প্রধান অতিথি ছিলেন বিজিবির দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল দেওয়ান মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম ও বিশেষ অতিথি ছিলেন ২৬ বিজিবির কমান্ডিং অফিসার কর্নেল জাহাঙ্গীর হোসেন, বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখের সন্তান আলহাজ গোলাম মোস্তাফা।
১৯৭১ সালের ৫ সেপ্টেম্বর যশোর জেলার গোয়ালহাটি ও ছুটিপুরে পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে সম্মুখযুদ্ধে মৃত্যুবরণ করেন রণাঙ্গনের লড়াকু সৈনিক নূর মোহাম্মদ শেখ। তাঁকে বেনাপোল থেকে ১৫ কিলোমিটার উত্তরে যশোরের শার্শা উপজেলার কাশিপুর সীমান্তে সমাহিত করা হয়।
জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান নূর মোহাম্মদ শেখ ১৯৩৬ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি নড়াইল সদর উপজেলার চণ্ডীবরপুর ইউনিয়নের মহিষখোলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন, যা বর্তমানে নূর মোহাম্মদনগর। তাঁর বাবার নাম মোহাম্মদ আমানত শেখ এবং মায়ের নাম জেন্নাতুন্নেছা। মতান্তরে জেন্নাতা খানম। বাল্যকালেই তিনি বাবা-মাকে হারান। লেখাপড়া করেছেন সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত।
মুক্তিযুদ্ধের সময় যশোর অঞ্চল নিয়ে গঠিত ৮ নম্বর সেক্টরে অংশগ্রহণ করে স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করেন। যুদ্ধ চলার সময়ে ক্যাপ্টেন নাজমুল হুদার নেতৃত্বে যশোরের শার্শা উপজেলার কাশিপুর সীমান্তের বয়রা অঞ্চলে পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেন তিনি। ৫ সেপ্টেম্বর পাকিস্তানি বাহিনীর গুলিতে নূর মোহাম্মদের সহযোদ্ধা নান্নু মিয়া গুরুতর আহত হন। আহত সহযোদ্ধাকে কাঁধে নিয়েই এলএমজি হাতে শত্রুর সঙ্গে যুদ্ধ করেন তিনি। হঠাৎ পাকিস্তানি বাহিনীর মর্টারের আঘাতে নূর মোহাম্মদ গুরুতর আহত হন। তবু গুলি চালান তিনি। প্রিয় মাতৃভূমিকে শক্রমুক্ত করার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যান। একসময় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন নুর মোহাম্মদ।