২০৩০ সালের মধ্যেই কার্যকরী বাহিনী হবে নৌবাহিনী

২০৩০ সালের মধ্যেই নৌবাহিনীকে একটি কার্যকরী বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ লক্ষ্যে সরকার স্বল্প এবং দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে বলে জানান তিনি।
urgentPhoto
আজ রোববার সকালে বাগেরহাটের মংলার দিগরাজ নৌঘাঁটিতে নবনির্মিত এলসিটি-১০৩ ও এলসিটি-১০৫ নৌবাহিনীতে সংযুক্তিকরণ ও বানৌজা কে জে আলী, বানৌজা সন্দ্বীপ ও বানৌজা হাতিয়ার কমিশনিং অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে প্রধানমন্ত্রী এ কথা জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, নৌবাহিনীকে একটি কার্যকর বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা ২০৩০ সালের মধ্যেই বাস্তবায়িত হবে। তিনি বলেন, এই পরিকল্পনার আওতায় স্বল্প সময়ের মধ্যে সমুদ্রসীমা নির্ধারণে সহায়তার জন্য অত্যাধুনিক সার্ভে জাহাজ বানৌজা অনুসন্ধান নৌবহরে সংযোজন করা হয়। এরপর মেরিটাইম হেলিকপ্টার ও মেরিটাইম পেট্রল এয়ারক্রাফট সংযোজন নৌবাহিনীতে নতুন মাত্রা যোগ করে। তারপর একে একে নৌবাহিনীতে সংযোজিত হয়েছে দুটি মিসাইল ফ্রিগেট, আমেরিকায় তৈরি একটি ফ্রিগেট, দুটি মিসাইল করভেট এবং খুলনা শিপইয়ার্ডে তৈরি পাঁচটি পেট্রল ক্রাফট। বিশাল সমুদ্র এলাকায় টহল এবং পর্যবেক্ষণের সক্ষমতা বর্তমানে বহুগুণে বেড়ে গিয়েছে, যা আমাদের সমুদ্রসীমা এবং সম্পদ রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানান, আমেরিকায় তৈরি আরো একটি ফ্রিগেট বানৌজা সমুদ্র অভিযান এবং চীনে নির্মাণাধীন অত্যাধুনিক দুটি করভেট বানৌজা প্রত্যয় এবং স্বাধীনতা এ বছরেই নৌবহরে সংযোজিত হবে। এই সরকারের আমলেই আনকনভেনশনাল ওয়ারফেয়ারের জন্য সংযোজিত হয়েছে স্পেশাল ফোর্স ‘সোয়াডস’। সর্বশেষে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে ত্রিমাত্রিক নৌবাহিনীতে পরিণত করার লক্ষ্যে এরই মধ্যে দুটি সাবমেরিন সংযোজনের প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হয়েছে, যা ২০১৬-এর মাঝামাঝি নৌবাহিনীতে সংযোজিত হবে। নৌবাহিনী জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে দক্ষতার সঙ্গে গত এক বছর ধরে দায়িত্ব পালন করে দেশের জন্য সুনাম বৃদ্ধি ও ভূয়সী প্রশংসা অর্জন করছে বলে সন্তোষ প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রীর কর্মসূচি অনুযায়ী আজ বেলা ১২টা ৪৫ মিনিট পর্যন্ত মংলায় অবস্থান করেন। এরপর হেলিকপ্টারে করে দুপুর ১টা ১০ মিনিটে খুলনায় নৌবাহিনীর বিএনএস তিতুমীর ঘাঁটিতে অবতরণ করেন প্রধানমন্ত্রী। সেখান থেকে সড়কপথে যান শিপইয়ার্ডে। সেখানে দেশের প্রথম বড় যুদ্ধজাহাজ নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন তিনি। উদ্বোধন শেষে সামরিক কর্মকর্তা ও সুধীজনদের উদ্দেশে ভাষণ দেন। বিকেল ৪টায় হেলিকপ্টারে করে ঢাকায় ফেরার কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর।
এর আগে সকালে প্রধানমন্ত্রী মংলার দিগরাজ নৌঘাঁটিতে এসে পৌঁছালে নৌবাহিনীর প্রধান ভাইস অ্যামিরাল এম ফরিদ হাবিব ও খুলনা নৌ-অঞ্চলের আঞ্চলিক কমান্ডার তাঁকে স্বাগত জানান। এ সময় নৌবাহিনীর একটি সুসজ্জিত দল প্রধানমন্ত্রীকে গার্ড অব অনার দেয়। তিনি গার্ড পরিদর্শন ও সালাম গ্রহণ করেন। পরে তিনি জাহাজের অধিনায়কদের হাতে কমিশনিং ফরমান তুলে দেন এবং জাহাজের নামফলক উন্মোচন করেন। এ সময় নৌবাহিনীর রীতি অনুযায়ী শিপস বেল বাজানো ও পতাকা উত্তোলন করা হয়। আনুষ্ঠানিকতা শেষে প্রধানমন্ত্রী খানজাহান আলী জাহাজ পরিদর্শন করেন। এ সময় মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, সংসদ সদস্য, কূটনৈতিক মিশনের সদস্য, সেনা ও বিমানবাহিনীর প্রধান এবং সরকারের উচ্চপদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।