বজ্রপাতে নিহত জেলের লাশ চুরি ঠেকাতে কবর পাহারা!

বাগেরহাটের মোংলায় বজ্রপাতে নিহত এক জেলের লাশ চুরির যাওয়ার আশংকায় রাত জেগে তাঁর কবর পাহারা দিচ্ছে গ্রামবাসী। শুধু তাই নয়, এরপরও কেউ যেন লাশ চুরি করে নিয়ে যেতে না পারে সেজন্য এখন কবরটিকে পাকা করার কাজ চলছে। চুরির ভয়ে কবরস্থানে দাফন না করে নিজ বাড়িতেই দাফন দেওয়া হয়েছে বজ্রপাতে নিহত ওই জেলেকে।
নিহত জেলের নাম শফিকুল ইসলাম (৩০)। তাঁর পরিবারের সদস্যরা জানান, গত ১৮ জুন বিকেল ৩টা ২০ মিনিটের দিকে মোংলার জয়মনি-কাটাখালী এলাকায় আঘাত হানে ভয়াবহ টর্নোডো। টর্নোডোর সময় পশুর নদীতে মাছ ধরা অবস্থায় বজ্রপাতে আহত হয়ে নদীতে পড়ে নিখোঁজ হন কাটাখালী গ্রামের জেলে শফিকুল ইসলাম। এর একদিন পর পশুর নদের কাটাখালী এলাকা থেকেই শফিকুলের লাশ উদ্ধার করেন স্থানীয় জেলেরা। নদী থেকে শফিকুলের লাশ তোলার পর দেখা যায় শরীরের একপাশে আগুনে পুড়ে যাওয়ার মতো ক্ষত হয়েছে।
এদিকে কবর খুঁড়ে বজ্রপাতে নিহতদের লাশ চুরি হয় এমন গুজবের কারণে শফিকুলের লাশ স্থানীয় কবরস্থানে দাফন না করে তাঁর বাড়িতেই কবর দেওয়া হয়। এরপর থেকে লাশ চুরির ভয়ে নিহত শফিকুলের পরিবার, আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব ও গ্রামবাসী আট থেকে নয়দিন ধরে দিন-রাত জেগে পালাক্রমে কবর পাহার দিয়ে আসছে।
লাশ যেন কোনোভাবেই চুরি না হয় সেজন্য আত্মীয়স্বজন ও গ্রামবাসী মিলে আজ বুধবার থেকে কবরটি ইট দিয়ে পাকা ও উপরে ঢালাই দিয়ে আটকে দেওয়ার কাজ শুরু করেছে।
নিহত শফিকুলের বন্ধু খোকন হাওলাদার ও হেমায়েত শেখ বলেন, তাঁরা শুনেছেন যে বজ্রপাতে নিহতদের লাশ কবর থেকে চুরি হয়। এ জন্য তাঁরা গ্রামবাসী মিলে পালাক্রমে দিনে ও রাতে শফিকুলের কবর পাহারা দিচ্ছেন। আর এখন গ্রামবাসীর সহায়তায় কবরটি পাকা করে দিচ্ছেন যেন লাশ চুরি না হয়।
স্থানীয় ইউনিয়িন পরিষদের (ইউপি) সদস্য মো. ওলিয়ার রহমান বলেন, ‘শুনে আসছি বজ্রপাতে নিহতের শরীরে ম্যাগনেট ধরনের কিছু একটা সৃষ্টি হয়ে থাকে সে জন্যই নাকি লাশ চুরি হয়। এই আশংকায়ই শফিকুলের কবর পাহারা ও পাকা করা হচ্ছে।’