তিস্তার পাড়ে ভাঙন, হুমকির মুখে বিজিবি ক্যাম্প

নীলফামারীতে তিস্তা নদীর পানি কমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়েছে। গত শনিবার রাতে তিস্তার ভাঙনে ডিমলা উপজেলার চরখড়িবাড়ী মৌজার কাইয়ুমের বাড়ি এলাকা সংলগ্ন রাস্তার ৫০০ মিটার নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। আর এতে বসতবাড়িসহ ভাঙনের আশঙ্কায় আছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) একটি ক্যাম্প।
এতে চরখড়িবাড়ী এলাকার এক হাজার ৮০০ পরিবারের বসতবাড়িতে নতুন করে বন্যার পানি প্রবেশ ও ভাঙন শুরু হয়েছে। রাস্তাটি ভেঙে যাওয়ার ফলে চরখড়িবাড়ী বিজিবি ক্যাম্পের ভেতরে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। ওই এলাকা হাঁটু পানিতে তলিয়ে গেছে। যেকোনো মুহূর্তে বিজিবির ক্যাম্পটি ভাঙনের শিকার হতে পারে।
চরখড়িবাড়ী বিজিবি ক্যাম্পের ক্যাম্প কমান্ডার নায়েক সুবেদার আবদুল মাজেদ বলেন, বিজিবি ক্যাম্পটি গতকাল রোববার সকাল থেকে হাঁটু পানিতে তলিয়ে আছে। ক্যাম্পের ৩০০ ফুট কাছাকাছি তিস্তার মূল নদী ও তিন মিটার পাশ দিয়ে বন্যার পানি প্রবল বেগে বইতে থাকায় যেকোনো সময় নদীর ভাঙনে ক্যাম্পটি বিলীন হওয়ার আশঙ্কা আছে বলে তিনি জানান।
সোমবার দুপুরে বিজিবি ক্যাম্পটি পরিদর্শন করেন বিজিবির-৭ ব্যাটালিয়নের উপ-অধিনায়ক আবু নায়েম মোহাম্মদ সালাউদ্দিন।
ভাঙনে রাস্তা বিলীন হওয়ায় চরখড়িবাড়ী মৌজার শত শত বিঘা জমির আমন ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। এলাকার পাঁচটি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও একটি উচ্চ বিদ্যালয়ে বন্যার পানি ও ভাঙনের শিকার হয়েছে। এ ছাড়া ভাঙনের আশঙ্কায় আছে একটি কমিউনিটি ক্লিনিক।
ডিমলা উপজেলার ঝুনাগাছ চাঁপানী ইউনিয়নের ভেন্ডাবাড়ী, ছাতুনামা, ফরেস্ট ও টেপাখড়িবাড়ী ইউনিয়নের চর খড়িবাড়ী গ্রামে কয়েক দিন ধরে ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়েছে। তিস্তা নদী ঘেঁষা বাঁধের ৩০০ মিটার তিস্তার নদীতে বিলীন হয়েছে। এদিকে উপজেলার টেপাখড়িবাড়ী ইউনিয়নের প্রায় ৪০টি পরিবারের ১৫০ জন, খগাখড়িবাড়ী ইউনিয়নের ৭০টি পরিবারের ৩০০ মানুষ তিস্তার ভয়াবহ ভাঙনের কারণে মানবেতর জীবনযাপন করছে।
টেপাখড়িবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম শাহিন জানান, তাঁর ইউনিয়নের চরখড়িবাড়ী গ্রামের প্রায় ৪০টি পরিবারের লোকজন তিস্তার ভাঙনের কারণে একদিকে আশ্রয় অন্যদিকে শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানির চরম সংকটে পড়েছে।
এ ব্যাপারে ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাউল করিম জানান, ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর তালিকা তৈরি করতে ইউপি চেয়ারম্যানদের বলা হয়েছে। তালিকা প্রস্তুত হলেই ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।