সুন্দরবনে তিন মাস পর্যটন নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব

বন্যপ্রাণীর প্রজনন মৌসুম জুন থেকে আগস্ট মাস। ওই তিন মাস সুন্দরবনে পর্যটন নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব দিয়েছে পূর্ব সুন্দরবন প্রজনন বিভাগ। বিভাগের কর্মকর্তাদের দাবি, ওই মৌসুমে পর্যটনের কারণে বন্যপ্রাণীর বংশবিস্তারে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।
রয়েল বেঙ্গল টাইগার, চিত্রা, মায়া হরিণসহ বনের প্রায় ৩৭৫ প্রজাতির বন্যপ্রাণীর প্রজনন নির্বিঘ্ন করতে নির্দিষ্ট এই প্রজনন মৌসুমে সব ধরনের পর্যটন নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে পূর্ব সুন্দরবন বিভাগ (বাগেরহাট) থেকে খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষকের মাধ্যমে প্রধান বন সংরক্ষকের (সিসিএফ) কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। পৃথিবীর বৃহত্তম এই বনের বন্যপ্রাণীর অবাধ বিচরণ ও বংশবিস্তারের লক্ষ্যে বন বিভাগের সদর দপ্তরে পাঠানো এ প্রস্তাব ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখছেন বন অধিদপ্তরের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ বিভাগ।
পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের (বাগেরহাট) বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. মাহমুদুল হাসান জানান, সুন্দরবন হচ্ছে দেশের বন্যপ্রাণীর বৃহত্তম বিচরণ ভাণ্ডার। সুন্দরবনের ছয় হাজার ১৭ বর্গকিলোমিটার আয়তনের বাংলাদেশ অংশে রয়েছে রয়েল বেঙ্গল টাইগার, চিত্রা ও মায়া হরিণ, বিলুপ্তপ্রায় ইরাবতীসহ বিভিন্ন প্রজাতির ডলফিন, লোনা পানির কুমির, বন্য শূকর, উদবিড়ালসহ ৩৭৫ প্রজাতির প্রাণী। সুন্দরবনে ২০০৪, ২০০৭, ২০১১ ও ২০১৫ সালের জরিপে দেখা গেছে, রয়েল বেঙ্গল টাইগার ও হরিণসহ বন্যপ্রাণীর আধিক্য এলাকাগুলোতেই পর্যটকরা ভ্রমণে অগ্রাধিকার দিয়ে থাকেন। জুন থেকে আগস্ট—এ তিন মাস সুন্দরবনের টাইগার ও হরিণসহ বন্যপ্রাণীর প্রজনন মৌসুম। পর্যটকদের কারণে বন্যপ্রাণীর অবাধ বিচরণ ও প্রজননে বাধার সৃষ্টির ফলে বংশবিস্তারেও নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। এ অবস্থায় প্রজনন মৌসুমের তিন মাস পর্যটন নিষিদ্ধ করার একটি প্রস্তাব খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক (সিএফ) মো. আমির হোসাইন চৌধুরীর কাছে গত মাসে পাঠানো হয়।
মাহমুদুল হাসান জানান, জলবায়ু পরিবর্তনসহ মানুষ সৃষ্ট নানা কারণে সুন্দরবনের প্রাণিকুল সংকটের মধ্যে রয়েছে। এরই মধ্যে সুন্দরবন থেকে বিলুপ্ত হয়েছে দুই প্রজাতির হরিণ, দুই প্রজাতির গণ্ডার, এক প্রজাতির মিঠাপানির কুমির ও এক প্রজাতির বন্য মহিষ।