১৭ বছরে ৪৪ বাঘের মৃত্যু

২০০০ সাল থেকে ২০১৭ সালের জুন পর্যন্ত বাঘের আক্রমণে ৩৩০ জন মানুষ মারা গেছে। একই সময় মানুষের হাতে ৩১টি বাঘের মৃত্যু হয়েছে। আর বার্ধক্যজনিত কারণে মারা গেছে ১৩টি বাঘ। অর্থাৎ গত ১৭ বছরে ৪৪টি বাঘ মারা গেছে।
বিশ্ব বাঘ দিবস উপলক্ষে আজ রোববার খুলনায় আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এই তথ্য জানানো হয়।
‘বাঘ বাঁচাই, বাঁচাই বন, রক্ষা করি সুন্দরবন’ এ স্লোগানে নানা আয়োজনে আজ খুলনায় বিশ্ব বাঘ দিবস পালিত হয়। এ উপলক্ষে বন অধিদপ্তরের আয়োজনে র্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব।
উপমন্ত্রী বলেন, নয়নাভিরাম লীলাভূমি সুন্দরবন। এ বনকে রক্ষা করতে হলে অবশ্যই আগে বাঘকে রক্ষা করতে হবে। সরকার বাঘ রক্ষায় বিশেষ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ আগ্রহে ঢাকায় ২০১৪ সালে বাঘ সমৃদ্ধ দেশগুলোর নেতৃবৃন্দের আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
জ্যাকব বলেন, সুন্দরবন ও বাঘ রক্ষায় ভিলেজ টাইগার রেসপন্স টিম (ভিটিআরটি) পদ্ধতির মাধ্যমে সমন্বিত প্রকল্প চলমান আছে। দেশ আন্তর্জাতিক অঙ্গনের বিভিন্ন সূচকে উন্নতি লাভ করেছে। এর সাথে আমরা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সবুজ শ্যামল বাংলা চাই। চলমান উন্নয়ন কার্যক্রম ও মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন যেন পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাব না ফেলে সেদিকে নজর দিতে হবে বলেও তিনি জানান।
অনুষ্ঠানে আরো জানানো হয়, বাংলাদেশসহ বিশ্বের ১৩টি দেশে বাঘের অস্তিত্ব আছে। বাঘ শিকার, বনাঞ্চল ধ্বংস প্রভৃতি কারণে বাঘের সংখ্যা ক্রমেই কমছে। ২০১৫ সালের জরিপ অনুযায়ী সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা ১০৬টি।
অনুষ্ঠানে ‘বাংলাদেশ টাইগার অ্যাকশন প্ল্যান ২০১৮ সাল থেকে ২০২৭’-এর মোড়ক উন্মোচন করা হয়। এই আলোচনা সভায় বাংলাদেশ বাঘ সংরক্ষণ শিরোনামে এক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন উপপ্রধান বন সংরক্ষক ড. তপন কুমার দে। সেখানে বলা হয়, ২০১৫ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে মোট বাঘের সংখ্যা ১০৬টি। ২০০০ সাল থেকে ২০১৭ সালের জুন পর্যন্ত বাঘের আক্রমণে ৩৩০ জন মানুষ মারা গেছেন। একই সময় মানুষের হাতে ৩১টি বাঘের মৃত্যু হয়েছে। আর বার্ধক্যজনিত কারণে মারা গেছে ১৩টি বাঘ। অর্থাৎ গত ১৭ বছরে ৪৪টি বাঘ মারা গেছে।
প্রধান বন সংরক্ষক মোহাম্মদ সফিউল আলম চৌধুরীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খুলনার জেলা প্রশাসক আমিন উল আহসান, খুলনা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ হারুনুর রশীদ, খুলনা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার সরদার রকিবুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরী। মূল প্রতিপাদ্য বিষয়ের ওপর আলোচনা করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যার অধ্যাপক ড. এম এ আজিজ।
এর আগে সকালে শহীদ হাদিস পার্ক থেকে বিশ্ব বাঘ দিবসের র্যালি শুরু হয়ে খুলনা অফিসার্স ক্লাবে গিয়ে শেষ হয়।