কিশোরীকে ভারতে বিক্রি, নিজের বুদ্ধিতে পেল মুক্তি

মেয়েটির (১৪) জন্মের পর বাবা আরেকটি বিয়ে করেন। আর অন্যত্র বিয়ে করেন মা। মায়ের সঙ্গেই থাকত সে। কিন্তু সৎ বাবার অত্যাচার তার জীবনকে দুর্বিষহ করে তোলে।
অন্যদিকে চাকরির লোভ দেখিয়ে মেয়েটির খালু তাকে ভারতের কলকাতায় একজনের কাছে বিক্রি করে দেন। এরপর হাত বদল হয়ে মেয়েটির স্থান হয় দেশটির গুজরাটে। বাধ্য করা হয় দেহ ব্যবসায়। তবে একদিন বুদ্ধি খাটিয়ে পুলিশের সাহায্য চায় মেয়েটি। এরপর তাকে উদ্ধার করে প্রায় ২০ মাস পরে দেশে আনা হয়।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে খুলনা মহানগর পুলিশ (কেএমপি) কমিশনারের দপ্তরে সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানান কেএমপি কমিশনার মো. হুমায়ুন কবীর।
কেএমপি কমিশনার জানান, গত বছরের ১৮ জানুয়ারি কিশোরীর আপন খালু ইসমাইল খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলার বাড়িতে যান। এরপর ওই কিশোরীকে বেড়ানোর কথা বলে তাঁর বাড়িতে নিয়ে যান। খালু ইসমাইল পরে তাকে ভালো চাকরি ও অনেক বেতনের প্রলোভন দেখিয়ে কলকাতায় রেখে আসেন। কিছুদিন পর মেয়ের খবর জানতে চান মা। তখন ইসমাইল জানান, তিনি কিছু জানেন না।
এই ঘটনার এক মাস পর ওই কিশোরীর মা বাদী হয়ে হরিণটানা থানায় খালু ইসমাইল সরদার, শাহিন মল্লিকসহ তিনজনের নামে শিশু অপহরণের মামলা করেন। এরপর পুলিশ তাঁদের গ্রেপ্তার করে। জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা স্বীকার করেন, ওই কিশোরীকে গুজরাটে রাখা হয়েছে। এরপর থেকেই পুলিশ ইন্টারপোলের সঙ্গে যোগাযোগ করে।
অপরদিকে কিশোরীটি একদিন সুযোগ বুঝে গুজরাট পুলিশের সহায়তার জন্য ১০১ নম্বরে ডায়াল করে। পরে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে গুরজাটের একটি ভিকটিম আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে রাখে।
মামলার সূত্র ধরে ইন্টারপোলের সহয়তায় বাংলাদেশের পুলিশ গুজরাটের ভিকটিম সেন্টারে কিশোরীটির সন্ধান পায়। পরে একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার সহায়তায় গতকাল বুধবার ওই কিশোরী খুলনায় এসে পৌঁছায়। আজ বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে তাকে আদালতে জবানবন্দি দেওয়ার জন্য হাজির করা হয়।
জানা গেছে, ওই কিশোরীর জন্মের পর তার বাবা তাকে ও তার মাকে ফেলে রেখে অন্যত্র চলে যান। এদিকে কিশোরীর মা আরেকটি বিয়ে করেন। সেখানেই মায়ের সঙ্গে থাকত ওই কিশোরী। সৎ বাবার অত্যাচার থেকে বাঁচতে ভালো চাকরির প্রলোভনে পা দেয় সে।