দেড় লাখ টাকার গরুর চামড়া ৬০০ টাকা, হতাশা

গরুর দাম ছিল দেড় লাখ টাকা। আর সেই গরুর চামড়া দাম মাত্র ৫০০-৬০০ টাকা। ফলে বিভিন্ন মাদ্রাসার শিক্ষক বা গ্রামগঞ্জ থেকে যাঁরা চামড়া সংগ্রহ করে বিক্রি করতে আসেন, তাঁদের মধ্যে হতাশা আর ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। এর আগে ঈদের দিন থেকে নগরীর বিভিন্ন স্থানে শামিয়ানা টানিয়ে যে চামড়া কেনা হতো, সে চিত্র এবার কোথাও দেখা যায়নি। বরং গত বছরও যে স্থানে চামড়ার আড়ত ছিল, এবার সেসব স্থানে অন্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দেখা গেছে।
ব্যবসায়ীরা কেউ বলছেন বিশ্ববাজারে মন্দা, আবার কেউ বা বলছেন ট্যানারি মালিকদের সিন্ডিকেট আর ভারতে পাচারের জন্য চামড়াশিল্পে ধস নেমে গেছে।
ভ্যান, রিকশা, ইজিবাইকে করে নগরীর বিভিন্ন স্থান থেকে বেশি দামের আশায় চামড়া নিয়ে আসছে নগরীর শেরেবাংলা রোডে চামড়ার আড়তগুলোতে। কিন্তু চামড়ার দাম শুনে বিক্রেতারা অনেকটা হতভম্ব হয়ে পড়ছেন। চামড়া আবার অনেকে ফেরত নিয়ে অন্যত্র চলে যাচ্ছেন। কিন্তু কোথাও কাঙ্ক্ষিত মূল্য না পেয়ে আবারও আগের সেই আড়তে ফেরত আসছে। গতকাল বুধবার বিকেলে নগরীর শেরেবাংলা সড়কে আড়তগুলো ঘুরে এই চিত্র দেখা গেছে।
এ রকমই একজন রফিকুল ইসলাম রুবেল। মাদ্রসার জন্য পাওয়া চামড়া আর গম থেকে সংগ্রহ করা চামড়া নিয়ে বিপাকে পড়েছেন তিনি। এক লাখ ৪০ হাজার হাজার টাকা দামের গরুর চামড়া মাত্র ৫০০ টাকা! তা কিছুতেই তিনি মানতে পারছেন না রুবেল।
ক্ষুদ্র চামড়ার ব্যবসায়ী নজরুল ইসলামের মতে, চামড়ার দাম কমানো সিন্ডিকেটের কারসাজি। কারণ, তারা কেউ চামড়া কেনা বন্ধ করেনি।
তবে ভিন্নমত পোষণ করে খুলনা চামড়া আড়ত মালিক সমিতির সভাপতি মো. আমান উল্লাহ বলেন, বিশ্ববাজার এবং চীনা পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের ২৫ শতাংশ কর আরোপ কারণে দাম কমে গেছে।
তবে এ বিষয় একমত নন মাদ্রসার শিক্ষক মাওলানা মিজানুর রহমান। তাঁর মতে, চামড়া পাচার করতে একটি মহল এই সিন্ডিকেট করেছে।
কোরবানির পশুর চামড়ার দাম কমে যাওয়ায় মূলত ক্ষতিগ্রস্ত হবে দেশের কওমি মাদ্রাসাগুলো। অনেকেই আড়তগুলোতে বিক্রি না করে সরাসরি মাদ্রাসা-এতিমখানায় দান করে দিচ্ছে। বাজারের সবকিছুর দাম যেখানে বাড়ছে আর সেখানে কী কারণে এই চামড়ার দাম কমছে, সেটি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের খতিয়ে দেখা দরকার।