মাগুরায় মাংস ব্যবসায়ীদের হয়রানির অভিযোগ

মাগুরা জেলা ও দায়রা জজের এমএলএসএস সেলিনা খাতুনের করা এসিড মামলাটিকে সাজানো বলে দাবি করেছেন জেলা মাংস ব্যবসায়ী ও আটক ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যরা। এই দাবি জানিয়ে তাঁরা আজ শনিবার মাগুরা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন। বাদী নিরীহ ব্যবসায়ীদের হয়রানি করছেন বলে অভিযোগ করেন তাঁরা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়েন মাগুরা জেলা মাংস ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. আশরাফ হোসেন। তিনি অভিযোগ করেন, মাগুরা জজ আদালতের কর্মচারী সুচতুর সেলিনা খাতুন (৪৮) জেলা ও দায়রা জজের বাসায় বাবুর্চির কাজ করেন। এই সুবাদে জজের নাম ভাঙিয়ে নিজের দ্বিতীয় স্বামীর প্রথম স্ত্রী চম্পা বেগমের মাগুরা শহরতলির নিজনান্দুয়ালি এলাকার বসতবাড়ি দখলের জন্য নানা হুমকি দিয়ে আসছিলেন। এরই সূত্র ধরে গত ৩১ আগস্ট রাতে নিজে এসিড-জাতীয় পদার্থ তাঁর মুখে ও হাতের দুটি স্থানে সামান্য পরিমাণ মাখেন। পরে এসিড নিক্ষেপের ঘটনা সাজিয়ে মাগুরা হাসপাতালে ভর্তি হয়ে সতিন চম্পা বেগম, তাঁর মামাতো ভাই পারলা গ্রামের মাংস ব্যবসায়ী সেলিম ও জাবেদকে আসামি করে সদর থানায় মামলা করেন। পুলিশ এ মামলায় তাঁদের আটক করে আদালতে পাঠালে বিচারক তাঁদের জেলহাজতে পাঠান।
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, মাগুরা সদর হাসপাতালে কোনো বার্ন ইউনিট না থাকলেও বাদী মাত্র তিনদিনে সম্পূর্ণ সুস্থ অবস্থায় ডাক্তারি ছাড়পত্র নিয়ে কর্মক্ষেত্রে যোগদান করে প্রমাণ করেছেন তাঁর গায়ে কোনো এসিড নিক্ষেপ হয়নি। অথচ বর্তমান মহিলা জেলা ও দায়রা জজের নাম ভাঙিয়ে তাঁর পেসকার লাল্টু মিয়ার সহযোগিতায় বাদী আসামিদের একাধিকবার রিমান্ড মঞ্জুর করিয়ে হয়রানি অব্যাহত রেখেছেন। এমনকি সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ও পুলিশের ওপর আদালত কর্তৃপক্ষের পরোক্ষ প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ করেছেন আটক ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যরা। অন্যদিকে আসামিদের পক্ষে যেন কোনো আইনজীবী আদালতে দাঁড়াতে না পারেন তার জন্যও আদালত কর্তৃপক্ষের অলিখিত হুমকি অব্যাহত থাকায় আসামিদের জামিনসহ ন্যায়বিচার না পাওয়ার অভিযোগ করেন সংবাদ সম্মেলনে।
সাংবাদিকদের মাধ্যমে আদালত কর্তৃপক্ষের কাছে তাঁরা দাবি করেন, দ্রুত আদালত থেকে এই এসিড মামলাটির একটি নিরপেক্ষ তদন্ত করে নিরপরাধ মানুষদের হয়রানি বন্ধ এবং তাঁদের মানবধিকার নিশ্চিত করতে হবে। অন্যথায় মাগুরা জেলা মাংস ব্যবসায়ী সমিতি অচিরেই কর্মবিরতিসহ মানববন্ধন কর্মসূচি পালনের হুমকি দেন।
সংবাদ সম্মেলনে মাংস ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক রহমত আলী, আটক চম্পার বাবা ওলিয়ার রহমান, স্কুলপড়ুয়া মেয়ে সুমি, হিরা, ছেলে মেজবা, আটক সেলিমের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী নাসরিন খাতুন, জাবেদের স্ত্রী ববি খাতুনসহ অর্ধশত মাংস ব্যবসায়ী ও তাঁদের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।