হয়রানি বন্ধে খুলনার ডিসিকে স্মারকলিপি দেবে বিএনপি

খুলনা মহানগর বিএনপির সাংগঠনিক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ সোমবার দুপুরে শহরের কে ডি ঘোষ রোডের দলীয় কার্যালয়ে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপির খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও মহানগর সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরেও খুলনায় বিএনপির নেতাকর্মীদের হয়রানি বন্ধে জেলা প্রশাসককে (ডিসি) স্মারকলিপি দেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় এ সভায়।
সভায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রামের অংশ হিসেবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানানো হয়।
নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) বক্তব্য অনুযায়ী রাজনৈতিক কর্মীদের কোনো ধরনের হয়রানি, গ্রেপ্তার ও তল্লাশি বন্ধের নির্দেশনা দেওয়া হয়। কিন্তু তার পরও খুলনা মহানগরীজুড়ে পুলিশ ও গোয়েন্দা পুলিশের অভিযান, বাড়ি বাড়ি তল্লাশি, নতুন করে গ্রেপ্তার ও গায়েবি মামলা দায়ের, কারাগারে আটক নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে নতুন করে অন্য থানার মামলায় শ্যোন অ্যারেস্ট দেখানোর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয় এই সভা থেকে। সেই সঙ্গে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নির্বাচনে যাওয়ার ঘোষণার পর আর কোনো নেতাকর্মীকে অহেতুক হয়রানি না করার দাবি জানানো হয়।
মহানগর বিএনপির সহদপ্তর সম্পাদক শামসুজ্জামান চঞ্চল স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য পরিবেশ তৈরিতে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের জোর দাবি জানানো হয়।
সভা থেকে নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পর প্রতীক বরাদ্দের আগে সব ধরনের প্রচার-প্রচারণা, মিছিল-সমাবেশ, শোডাউন আইনত নিষিদ্ধ হলেও নগরজুড়ে শাসকদলীয় ক্যাডারদের মোটরসাইকেল ও অস্ত্রের মহড়া, রাজপথ অবরুদ্ধ করে জনভোগান্তি ও আতঙ্ক সৃষ্টি করে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগকর্মীদের মিছিল-সমাবেশ করা এবং নৌকার পক্ষে ভোট চাওয়ার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি জোর দাবি জানানো হয়। সেই সঙ্গে পাড়া, মহল্লায় শাসক দলীয় ক্যাডার এবং নগরীতে প্রবেশ করা বহিরাগত সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ ও নগরীর প্রবেশ পথে চেকপয়েন্ট স্থাপনের দাবি জানানো হয়।
এ ছাড়া এ সভা থেকে নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি, নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন, নিরপেক্ষ প্রশাসন গড়ে তোলা, বিতর্কিত ও রাজনৈতিক মতাদর্শের ব্যক্তিদের ভোট গ্রহণের কাজে প্রিজাইডিং অফিসার, পোলিং অফিসার হিসেবে নিয়োগ না করা এবং নেতাকর্মীদের নিরাপত্তার দাবিতে আগামীকাল মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় খুলনার রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক বরাবর নগর বিএনপির পক্ষ থেকে স্মারকলিপি দেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
সভা থেকে পুলিশের অত্যাচার, মিথ্যা মামলার হয়রানি ও গ্রেপ্তার এড়াতে আত্মগোপনে থাকা নেতাকর্মীদের এলাকায় ফিরে আসার এবং নির্বাচনী প্রচারণা যুদ্ধে সর্বাত্মকভাবে ঝাপিয়ে পড়ার আহ্বান জানানো হয়।
সভা থেকে খুলনা মহানগরে দায়ের করা ১৮টি গায়েবি মামলা অবিলম্বে স্থগিত ও প্রত্যাহার, কারাগারে আটক ১৫৯ জন নেতাকর্মীর নিঃশর্ত মুক্তি, নতুন করে আর কোনো রাজনৈতিক কর্মীকে গ্রেপ্তার না করা এবং গ্রেপ্তার হওয়া নেতাকর্মীদের মুক্তি প্রক্রিয়া বিলম্বিত করতে অন্য থানার মামলায় শ্যোন অ্যারেস্ট দেখিয়ে নতুন করে হয়রানি না করার দাবি জানানো হয়।
এ সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মনিরুজ্জামান মনি, মীর কায়সেদ আলী, শেখ মোশারফ হোসেন, মোল্লা আবুল কাশেম, সিরাজুল ইসলাম, রেহানা আক্তার, স ম আব্দুর রহমান, শেখ ইকবাল হোসেন, ফখরুল আলম, অধ্যক্ষ তারিকুল ইসলাম, অধ্যাপক আরিফুজ্জামান অপু, সিরাজুল হক নান্নু, নজরুল ইসলাম বাবু, আসাদুজ্জামান মুরাদ, মেহেদী হাসান দীপু, মহিবুজ্জামান কচি, শফিকুল আলম তুহিন, মুজিবর রহমান, জালু মিয়া, ইকবাল হোসেন খোকন, এহতেশামুল হক শাওন, শেখ সাদী, ইউসুফ হারুন মজনু, সাজ্জাদ হোসেন তোতন, মুর্শিদ কামাল, মাসুদ পারভেজ বাবু, একরামুল কবির মিল্টন, একরামুল হক হেলাল, শামসুজ্জামান চঞ্চল, হেলাল আহমেদ সুমন, নিয়াজ আহমেদ তুহিন, নাজিরউদ্দিন আহমেদ নান্নু, হাফিজুর রহমান মনি, মুজিবর রহমান ফয়েজ, বদরুল আনাম, সাইদ হাসান লাভলু, হাসানউল্লাহ বুলবুল, জামিরুল ইসলাম, আফসারউদ্দিন মাস্টার, মীর কবির হোসেন, রবিউল ইসলাম রবি, মহিউদ্দিন টারজান, নাসির খান, ইমতিয়াজ আলম বাবু, শরিফুল আনাম, শেখ আব্দুল জব্বার, আবু সাঈদ শেখ, বাচ্চু মীর, সাইমুন ইসলাম রাজ্জাক, আব্দুল আলিম, মোল্লা ফরিদ আহমেদ, সরদার ইউনুস আলী, মোস্তফা কামাল, তৌহিদুল ইসলাম খোকন, মতলেবুর রহমান মিতুল, সাইফুল ইসলাম, কাজী মাহমুদ আলী, মেহেদী হাসান সোহাগ, আলমগীর কবির, জি এম রফিকুল হাসান, খান মইনুল হাসান মিঠু, জাহাঙ্গীর হোসেন, মনিরুল ইসলাম, নুরে আব্দুল্লাহ, শেখ সাদী, লিটু পাটোয়ারী, হেদায়েতুর রহমান হেদু প্রমুখ।