রাজশাহীতে স্বতন্ত্র প্রার্থী হলেন ২ আ.লীগ নেতা

রাজশাহীর ছয়টি আসনের মধ্যে চারটিতেই এবার কোনো পরিবর্তন আনেনি আওয়ামী লীগ। মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্যরাই। এরই মধ্যে রাজশাহী-৩ ও রাজশাহী-৫ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতার ঘোষণা দিয়েছেন আওয়ামী লীগের দুই নেতা।
শুধু রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দুর্গাপুর) আসনেই এবার নতুন কাউকে মনোনয়ন দিয়েছে আওয়ামী লীগ। এখানে মনোনয়ন পেয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক ডা. মুনসুর রহমান। এ আসনের বর্তমান এমপি আবদুল ওয়াদুদ দারা। মনোনয়নের আগে এমপিকে ঠেকাতে তৃণমূল নেতারা একজোট হয়েছিলেন। এদের একজন যুবলীগ নেতা ওবায়দুর রহমান। তবে দলের এই অংশটি ডা. মুনসুরকেও বয়কটের ঘোষণা দিয়েছে।
এই আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমাও দিয়েছেন আরেক মনোনয়নপ্রত্যাশী সাবেক এমপি তাজুল ইসলাম মো. ফারুক।
এদিকে, রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও সাবেক এমপি মিরাজ মোল্লা।
অথচ, গত বুধবার সকালে তাঁকে সঙ্গে নিয়েই পবা উপজেলার সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন বর্তমান সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দিন।
পরে সাংবাদিকদের কাছে আয়েন দাবি করেছিলেন, মনোনয়নবঞ্চিত অনেকেই তাঁকে সমর্থন জানিয়ে ভোটের মাঠে নামার অঙ্গীকার করেছেন। এ প্রসঙ্গে তিনি মিরাজ মোল্লা ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ মোস্তাফিজুর রহমান মানজালের কথা উল্লেখ করেন। কিন্তু এর কয়েক ঘণ্টা পরই তিনি খবর পান, মিরাজ মোল্লা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
এই আসনটিতে এবার মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহা. আসাদুজ্জামান আসাদ। মনোনয়নের প্রত্যাশায় কয়েক বছর থেকে সংসদীয় এ আসনটির তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত গণসংযোগ চালিয়েছেন আসাদ।
তবে শেষ পর্যন্ত তিনি মনোনয়ন পাননি। মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দিনই। কর্মী-সমর্থকদের নৌকার পক্ষে এক থাকার আহ্বান জানিয়ে আসাদ বক্তব্য রাখলেও ৩০ ডিসেম্বর ব্যালট বাক্সে এর প্রভাব পড়বে বলে মনে করেন দলের অনেক নেতাকর্মী।
এ ছাড়া রাজশাহী সদর আসন ১০ বছর ধরে শরিক দল ওয়ার্কার্স পার্টির দখলে। এবারও সদর আসনে ওয়ার্কার্স পার্টির মনোনয়ন আওয়ামী লীগের একটি বড় অংশ মেনে নিতে না পারলেও এখানে মনোনয়নকে ঘিরে আওয়ামী লীগে কোনো দ্বন্দ্ব দেখা যায়নি।
এ ছাড়া রাজশাহী-১ আসনে এবার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন দলটির জেলা সভাপতি ও বর্তমান এমপি ওমর ফারুক চৌধুরী। বাগমারা উপজেলা নিয়ে গঠিত রাজশাহী-৪ আসনে গত ১০ বছর ধরে একটানা সংসদ সদস্য হয়ে আছেন ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক। এবারও তিনিই মনোনয়ন পেয়েছেন। আর চারঘাট ও বাঘা উপজেলা নিয়ে গঠিত রাজশাহী ৬ আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।
আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রাজশাহীর ছয়টি আসনেই এবার লড়াই হবে হাড্ডাহাড্ডি। ভোটের মাঠে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ করতে ব্যর্থ হলে আসনগুলোতে আওয়ামী লীগের ভরাডুবির আশঙ্কা রয়েছে।
এ বিষয়ে রাজশাহী বিভাগের দায়িত্বে থাকা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি বলেন, ‘নেত্রী সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে ভোটের মাঠে কাজ করতে নির্দেশ দিয়েছেন। যাঁরা নির্দেশ উপেক্ষা করবেন, তাঁদের বিরুদ্ধে শক্ত সাংগঠনিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।’