স্বরূপ ঢাকতে পারেননি, ড. কামালকে কাদের

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনের সমালোচনা করেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, পাকিস্তানি ভাষা ‘খামোশ’ ব্যবহারের মধ্য দিয়ে ড. কামাল তাঁর ‘স্বরূপ’ প্রকাশ করেছেন। তিনি বাংলাদেশে ‘নষ্ট রাজনীতির প্রবক্তা’।
আজ শনিবার ফেনীর দাগনভূঁইয়া চৌরাস্তায় দাগনভূঁইয়া-বসুরহাট সড়কের উন্নয়নকাজ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন সড়ক ও সেতুমন্ত্রী।
গতকাল শুক্রবার সকালে মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীদের প্রতি ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন ঐক্যফ্রন্টের নেতারা। সেখান থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে একপর্যায়ে জামায়াত সম্পর্কিত প্রশ্নে ক্ষেপে যান সংবিধানের অন্যতম এই প্রণেতা।
ক্ষিপ্ত হয়ে ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘বেহুদা কথা বলো, কত পয়সা পেয়েছ এই প্রশ্ন করতে? কার কাছ থেকে পয়সা পেয়েছ? এই জায়গায় এই রাজনৈতিক প্রশ্ন করতে… । তোমার নাম কী? জেনে রাখব তোমাকে। চিনে রাখব। পয়সা পেয়ে শহীদ মিনারকে অশ্রদ্ধা করো তোমরা? আশ্চর্য, শহীদদের কথা চিন্তা করো! চুপ করো, চুপ করো! খামোশ, আশ্চর্য!,’ যোগ করেন প্রবীণ এই রাজনীতিবিদ।
ড. কামালের এ মন্তব্যের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। তার পরিপ্রেক্ষিতেই আজ শনিবার এক বিবৃতি এ ঘটনায় আন্তরিকভাবে দুঃখপ্রকাশ করেছেন ঐক্যফ্রন্টের নেতা।
আজ দুপুরে এ প্রসঙ্গ টেনে ড. কামাল হোসেনকে উদ্দেশ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, “তিনি সেই পুরোনো পাকিস্তানি ভাষাই তো ব্যবহার করছেন। তিনি যে তাঁর স্বরূপ ঢাকতে পারেননি ‘খামোশ’ বলার মধ্য দিয়ে, এটা তো গতকাল তিনি জাতির সামনে… এত নীতি-নৈতিকতার কথা যিনি বলেন, নষ্ট রাজনীতির বিরুদ্ধে বলেন, গতকাল তিনি প্রমাণ করলেন। তিনি বাংলাদেশে নষ্ট রাজনীতির প্রবক্তা।”
আগামী নির্বাচনে নৌকার পক্ষে গণজোয়ার দেখে ঐক্যফ্রন্ট ও বিএনপি নেতারা বেসামাল হয়ে পড়েছেন, তাই তাঁরা এমন আচরণ করছেন উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরো বলেন, ‘আজকে সারা দেশে নৌকার পক্ষে গণজোয়ার দেখে ঐক্যফ্রন্ট নেতারা বেসামাল হয়ে পড়েছেন; এবং তাঁরা বেপোরোয়া ড্রাইভারের মতো ড. কামাল হোসেনও বেপরোয়া আচরণ শুরু করেছেন।’
‘ভাবতেও অবাক লাগে তিনি এত নিচে নামতে পারেন! সাংবাদিক প্রশ্ন করেছে, তিনি বলছেন- কার টাকা খেয়েছ? তো সাংবাদিকদের যে অপমানটা করলেন, এটা তো সাংবাদিক হয়ে… এ প্রশ্নটা আপনি জিজ্ঞেস করেন। গাড়ির ওপর হামলা তো পরে’, বলেন ওবায়দুল কাদের।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ধানের শীষের পক্ষে জনগণ নেই, ধানের শীষে এখন গণভাটা, আর নৌকায় গণজোয়ার। বিএনপি নেতাদের, ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের আচার-আচরণে, ভাষায় প্রমাণ হচ্ছে তাঁরা দুর্বল হয়ে পড়ছে, সেই জন্যই তাঁদের মুখের বিষ উগ্র হয়ে উঠছে।’
দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির জন্য ঐক্যফ্রন্টকে দায়ী করে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির জন্য একমাত্র ঐক্যফ্রন্টই দায়ী। এই যে নোয়াখালীতে একজন খুন হয়েছে, ফরিদপুরে খুন হয়েছে, এ যাবৎ দুটা ক্যাজুয়ালটি হয়েছে, দুটোই কিন্তু আওয়ামী লীগের।’
‘তাহলে কে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাচ্ছে, ঐক্যফ্রন্ট না আওয়ামী লীগ?’, প্রশ্ন রাখেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।
সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলা শেষে ওবায়দুল কাদের নিজ নির্বাচনী এলাকা নোয়াখালীর বসুরহাটে রওনা করেন।