নির্বাচনে নারী ও সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে

আগামী ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনের দিন এবং ফল ঘোষণার পর পর্যন্ত নারী ভোটার ও সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানম।
আজ শুক্রবার সকালে খুলনার একটি হোটেলে নির্বাচনে নারীর নিরাপদ অংশগ্রহণ ও সুরক্ষা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে সচেতনতা বৃদ্ধিমূলক এক কর্মসূচিতে কবিতা খানম এসব কথা বলেন।
কবিতা খানম বলেন, ‘আমি মনে করি না যে, আমাদের যে পুলিশ প্রশাসন আছে, তাদেরই একমাত্র দায়িত্ব বা নির্বাচন কমিশনের একমাত্র দায়িত্ব। আমি মনে করি, স্টেকহোল্ডাররা যাঁরা আছেন, তাঁরাও এই দায়িত্বটা কিন্তু এড়িয়ে যেতে পারেন না। নারীদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার কারণ যে বিষয়গুলো, সেই বিষয়গুলো আমি এখানে যে রিটার্নিং অফিসাররা এবং আমার নির্বাচনী কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত যাঁরা আছেন, তাঁদের অবশ্যই আমি চিহ্নিত করতে বলব। এবং তাঁরা অবশ্যই চিহ্নিত করেছেন।’
‘এবং এই সমস্যাগুলো যদি আমরা চিহ্নিত করতে পারি, কাদের দ্বারা এটা বিঘ্নিত হতে পারে। নির্বাচনী পরিবেশটা কিন্তু ওভারঅল একটা সুষ্ঠু পরিবেশ থাকলে এটা কিন্তু নারীর জন্যও সুষ্ঠু থাকে। নারীর জন্য কিন্তু আলাদাভাবে একটা পরিবেশ বিশৃঙ্খল হয়ে ওঠে না। সামগ্রিকভাবে পরিবেশটা যদি সুষ্ঠু থাকে, তাহলে কিন্তু নারী ও পুরুষ উভয়ই ভোটাধিকার সুষ্ঠুভাবে প্রয়োগ করে আবার নিরাপদে ঘরে ফিরে যেতে পারে।’
বাংলাদেশের প্রথম নারী নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘এখানে সংখ্যালঘুদের বিষয়টা রয়েছে। শুধু ভোটের দিন না, ভোটের পরে রেজাল্ট হওয়া পর্যন্ত। অনেক সময় মনে করা হয়, এই গোষ্ঠীটা এই দলকে ভোট দিয়েছে, তাই আমি জয়ী হতে পারি নাই। এই যে একটা মানসিকতা থেকেও কিন্তু আমাদের বের হয়ে আসতে হবে। সুতরাং শুধু আইন দিয়েই কিন্তু সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। মানসিকতার প্রয়োজন আছে, সংশোধন হওয়ার। এই মানসিকতার পরিবর্তন করতে হবে।’
কবিতা খানম বলেন, ‘আগামী ৩০ ডিসেম্বর নারীদের জন্যে যেন একটা নিরাপদ ডিসেম্বর হিসেবে পরিচিতি পায়, এই আহ্বান সবার পক্ষে জানাচ্ছি।’
বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন, ইউএনডিপি এবং ইউএন ওমেন যৌথভাবে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ ছিলেন খুলনার বিভাগীয় কমিশনার লোকমান হোসেন মিয়া, পুলিশের খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি মো. দিদার আহমেদ, পুলিশ কমিশনার (ভারপ্রাপ্ত) সরদার রকিবুল ইসলাম, খুলনা জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ হেলাল হোসেন, পুলিশ সুপার এস এম শফিউল্লাহ, ইউএনডিপির পরামর্শক এটসুকু হিরাকাওয়া, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক হোসনে আরা এবং জেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা নার্গিস ফাতেমা জামিন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. মজিবুর রহমান।
এর আগে নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানমের নেতৃত্বে সচেতনতা বৃদ্ধিমূলক একটি র্যালি নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে। ওই র্যালিতে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করে।