মৌলভীবাজার-৩ আসনের ফল প্রত্যাখ্যান করলেন নাসের রহমান
![](http://103.16.74.218/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2018/12/31/photo-1546276770.jpg)
মৌলভীবাজার-৩ (সদর ও রাজনগর) আসনে বিএনপি মনোনীত ধানের শীষের প্রার্থী এম নাসের রহমান ভোট ডাকাতির অভিযোগে নির্বাচনের ফল প্রত্যাখ্যান করেছেন। ফলাফল বাতিলের দাবি জানিয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত আবেদন করেছেন তিনি।
সোমবার বিকেল ৪টায় মৌলভীবাজার সদর উপজেলার বাহারমর্দানের নিজ বাসভবনে আয়োজিত প্রেস বিফ্রিংয়ে এ দাবি জানান নাসের রহমান।
এ সময় জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক অর্থ ও পরিকল্পনামন্ত্রী এম সাইফুর রহমানের ছেলে নাসের রহমান বলেন, এটি ইতিহাসের একটি জঘন্যতম নির্বাচন। পৃথিবীর আর কোনো স্বৈরাচার কর্তৃক এ ধরনের নির্বাচনের কথা কেউ শোনেনি বা দেখেওনি। নির্বাচনের ইতিহাসে এই প্রথমবার পুলিশের মাধ্যমে সরাসরি কেন্দ্র দখল ও জাল ভোট দেওয়ার অকল্পনীয় ও অবিশ্বাস্য কাণ্ড ঘটেছে, যা নির্বাচনী সুষ্ঠু পরিবেশকে কলুষিত করেছে। পুলিশ ও প্রার্থী একসঙ্গে জাল ভোট দিয়েছে। এই নির্বাচনে ভোট চুরি ছিনতাইয়ের নতুন নতুন বৈশিষ্ট্য আর প্রহসন প্রত্যক্ষ করল জনগণ।
নাসের রহমান অভিযোগ করে বলেন, মৌলভীবাজার-৩ আসনে ১৬৮টি কেন্দ্রের মধ্যে ১০০টি কেন্দ্রে ভোট ডাকাতি করা হয়েছে। ভোটের দিন সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় ছিল। এরপর থেকে ক্ষমতাসীন দলের লোকজন ভোটচুরি ও ডাকাতিতে নেমে পড়ে। এতে তারা জনগণের প্রতিরোধের মুখে পড়ে। পেরে উঠতে না পেরে এক পুলিশ কর্মকর্তার নেতৃত্বে পুলিশ সদস্যরা ব্যালট পেপারে সিল মারা থেকে শুরু করে বাইরে থেকে সিল মেরে আনা নৌকার ব্যালট কেন্দ্রের বাক্সে ভরতে থাকে। বেলা ১১টা পর্যন্ত মাঠের ভোটের আনুপাতিক হিসেবে নৌকা প্রতীক ৬০ থেকে ৬৫ হাজার ভোটের বেশি ভোট পাওয়ার কথা না। যেখানে ধানের শীষ প্রতীক দুই লক্ষাধিক ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হওয়ার কথা সেখানে আওয়ামী লীগ, পুলিশ, বিজিবি ও র্যাব একজোট হয়ে নির্বাচনী ফলাফল পাল্টে দিয়েছে। পুলিশ বিজিবির সদস্যরা দুই উপজেলার বিভিন্ন কেন্দ্রে জাল ভোট দিয়েছে। গণনার আগে পুলিশ কেন্দ্র থেকে ব্যালট বাক্স নিয়ে এসেছে। অনেক কেন্দ্রে জাল ভোট গণনার ব্যালট সিটে আমার পোলিং এজেন্টদের স্বাক্ষর নেওয়া হয়নি।
নির্বাচন সুষ্ঠু হলে এক লাখ ২০ হাজার ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হতেন বলে দাবি করেন নাসের রহমান। তিনি বলেন, কিন্তু ভোটের নামে এই প্রহসনের নির্বাচন সম্পন্ন করা হয়েছে। আমি বানোয়াট নির্বাচনী ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে তা বাতিলের জন্য নির্বাচন কমিশনের প্রতি দাবি জানিয়েছি।
এম নাসের রহমান অভিযোগ করেন, রাজনগর ও মৌলভীবাজার সদরে নির্বাচনের আগের দিন থেকে নির্বাচনের দিন পর্যন্ত পুলিশ ও আওয়ামী লীগের ক্যাডাররা জেলা বিএনপি নেতা মোয়াজ্জেম হোসেন মাতুক, সৈয়দ ফয়সল আহমদ, মশিদুল হোসেন, আব্দুস সহিদ মেম্বার, ফখরুল ইসলামসহ শতাধিক নেতাকর্মীদের বাড়িতে হামলা চালায়।
এ ছাড়া নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি পুলিশের হয়রানি অব্যাহত রয়েছে। সে কারণে নেতাকর্মীরা চরম আতঙ্কে রয়েছেন। নাসের রহমান বলেন, এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের এমন নির্লজ্জ কর্মকাণ্ডের দৃশ্য দেখে জনগণ ভোট, গণতন্ত্র ও রাজনীতির প্রতি আস্থা রাখবে না। দেশের সুষ্ঠু রাজনৈতিক পরিবেশ ও গণতন্ত্র নিয়ে আমি সন্দিহান।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান ভিপি মিজানুর রহমান, জেলা বিএনপির সহসভাপতি আলহাজ এম এ মুকিত, আশিক মোশারফ, জেলা বিএনপির জ্যেষ্ঠনেতা মোয়াজ্জেম হোসেন মাতুক, জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক বকসি মিছবাহ উর রহমান, সদর থানা বিএনপির সভাপতি হেলু মিয়া, সাধারণ সম্পাদক ফখরুল ইসলাম, জেলা বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মামুনুর রশিদ, পৌর বিএনপির সদস্য সচিব মনোয়ার আহমদ রহমান, জেলা বিএনপির সদস্য বদরুল ইসলাম, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা পিপলু আব্দুল হাই ও সৈয়দ ফয়ছল আহমদ প্রমুখ।