রাজশাহীতে পুলিশ কর্মকর্তাকে পেটালেন কাউন্সিলর

রাজশাহীর বোয়ালিয়া মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নিত্যপদ দাসকে পিটিয়েছেন সিটি করপোরেশনের আওয়ামী লীগ সমর্থিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর রবিউল ইসলাম তজু ও তাঁর লোকজন। গতকাল সোমবার বিকেল ৩টার দিকে নগরীর হেতেমখাঁ সাহাজিপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আহত পুলিশ কর্মকর্তা নিত্যপদ দাসকে রাজশাহী পুলিশ লাইন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সোমবার রাতে তাঁকে দেখতে সেখানে যান রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন। এ সময় তিনি নিত্যপদ দাসের চিকিৎসা ও শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নেন।
এ ঘটনায় ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও বোয়ালিয়া থানা (পশ্চিম) আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা রবিউল ইসলাম তজুসহ পাঁচজনকে আটক করে বোয়ালিয়া মডেল থানায় নিয়ে গেছে পুলিশ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বেশ কিছুদিন ধরে সাহাজিপাড়া এলাকার বাসিন্দা সাকিব ও রতনের পরিবারের সঙ্গে প্রতিবেশী জিয়ার রাস্তার জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল। এ বিষয়টি নিয়ে নগরীর ১১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর রবিউল ইসলাম তজুকে অভিযোগ করেন জিয়া।
রাজশাহীর বোয়ালিয়া মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নিত্যপদ দাসকে পেটানোর ঘটনায় নগরীর হেতেমখাঁ এলাকা থেকে একজনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। ছবি : এনটিভি
গত ২৬ জানুয়ারি শনিবার রাতে এ ব্যাপারে মীমাংসার জন্য কাউন্সিলর তজু তাঁর চেম্বারে সাকিব ও রতনকে ডেকে আনতে দুজন লোক পাঠান। এ সময় কাউন্সিলরের পাঠানো লোকদের সঙ্গে সাকিব ও রতনের বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে তাঁদের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। এ সময় সাকিবের মাথা ফেটে গেলে আহত অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
গতকাল হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে আসেন সাকিব। তারপর বিকেল ৩টার দিকে কাউন্সিলরের ওই দুই লোককে মারধরের চেষ্টা করেন তিনি। এ খবর শুনে কাউন্সিলর রবিউল আরো লোকজন নিয়ে সাকিব পক্ষের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন।
সংঘর্ষের খবর পেয়ে বোয়ালিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নিত্যপদ দাস ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। এ সময় পুলিশ দুই পক্ষকে থামাতে চেষ্টা করলে কাউন্সিলর ও তাঁর লোকজন নিত্যপদ দাসকে পিটিয়ে আহত করেন। নিত্যপদ দাসকে উদ্ধার করে রামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
পরে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে কাউন্সিলর তজুসহ পাঁচজনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
রাজশাহী মহানগর পুলিশের মুখপাত্র ও বিশেষ শাখার অতিরিক্ত উপকমিশনার ইফতে খায়ের আলম এবং বোয়ালিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমান উল্লাহ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, দুই পক্ষের মারামারির খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়েছিল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে। এ সময় কাউন্সিলরসহ তাঁর লোকজন পুলিশ পরিদর্শক নিত্যপদ দাসকে মারধর করেছে। এ জন্য ওয়ার্ড কাউন্সিলর রবিউল ইসলাম তজুসহ পাঁচজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। তাঁদের কাছ থেকে প্রকৃত ঘটনা জানার চেষ্টা চলছে।