অবশেষে জামিন পেলেন চার ‘অদম্য’

অবেশেষে জামিন পেলেন অদম্য ফাউন্ডেশনের চার সদস্য। পুরো এক মাস সাতদিন পর ‘শিশু পাচারের’ অভিযোগে গ্রেপ্তার এই চারজন আজ সোমবার জামিনে মুক্ত হয়েছেন।
গত ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানীর রামপুরার বনশ্রী থেকে শিশু পাচারকারী সন্দেহে গ্রেপ্তার করা হয় ‘অদম্য ফাউন্ডেশন’ নামে একটি বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার চার সদস্যকে। তবে পরবর্তীতে জানা যায়, তারা শিশু পাচারকারী নন বরং ছিন্নমূল ও পথশিশুদের নিয়ে কাজ করেন। তাঁদের গ্রেপ্তারের ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সমালোচনা শুরু হয়। পথশিশুদের নিয়ে কাজ করার অপরাধে যদি মানবপাচারকারী হিসেবে এই চারজনের সাজা হয়, তাহলে ভবিষ্যতে কেউ আর ভালো কাজে উৎসাহ পাবে না বলে মত দেন ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা। সেই সঙ্গে শুরু হয় অদম্য বাংলাদেশের চার সদস্যের জামিনের ব্যবস্থার নানা উদ্যোগ। তাঁদের মুক্তির দাবিতে বেশ কিছু কর্মসূচিও পালন করেন অদম্য বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের শুভাকাঙ্ক্ষীরা।
সংস্থাটির বনশ্রী শাখা থেকে উদ্ধার করা ‘পাচারের অপেক্ষায়’ থাকা শিশুরাও জানায় গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের দেওয়া শিক্ষায় আলোকিত হওয়ার কথা। জানিয়েছে, তাদের সঙ্গে কোনো খারাপ ব্যবহার করা হতো না বরং অনেক আদর-যত্ন করা হতো। তারা আগে লেখাপড়া করতে পারত না। এখন তারা অনেক কিছু জানে। তারা কম্পিউটারও চালাতে পারে।
জানা যায়, গ্রেপ্তার হওয়া আরিফুর রহমান, হাসিবুল ইসলাম সবুজ, জাকিয়া সুলতানা ও ফিরোজ আলম শুভর মতো শতাধিক স্বপ্নবাজ তরুণ-তরুণী কাজ করেন ‘অদম্য বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনে’। সরকারের যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নিয়েই কমপক্ষে পাঁচ হাজার শিশুকে একটু ভালো জীবন দেওয়ার জন্য কাজ করছে সংগঠনটি।
তবে এতকিছুর পরেও এই চারজনকে রিমান্ডে নেয় পুলিশ। উদ্ধার করা শিশুদের রাখা হয় গাজীপুরের কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে। উদ্ধারকৃত ১০ শিশু হলো ভোলার বাবুল (১০), আব্বাস (১০), স্বপন (১১), নোয়াখালীর আকাশ (১০), রফিক (১৩), কুমিল্লার মোবারক হোসেন (১৩), পিরোজপুরের আবদুল্লাহ আল মামুন (১১), নারায়ণগঞ্জের ইব্রাহিম (১০), ময়মনসিংহের রাসেল (১৩) ও মৌলভীবাজারের ফরহাদ হোসেন (১০)।
সবশেষে গত ১৪ অক্টোবর এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ চেয়ে ফেসবুকে একটি খোলাচিঠি লেখেন আশীফ এন্তাজ রবি নামে এক গণমাধ্যমকর্মী। তাঁর ওই পোস্টটি দেখে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ ও উপ-প্রেসসচিব আশরাফুল আলম খোকন বিষয়টির খোঁজখবর করেন।
এরপরই আজ সোমবার ঢাকার মহানগর হাকিম ইউসুফ হোসেনের আদালতে তাঁদের পক্ষের আইনজীবী জামিন চেয়ে আবেদন করেন। এই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারক তাঁদের জামিন মঞ্জুর করেন।