বিএনপিনেতা শাহীন হত্যায় যুবলীগনেতা রিমান্ডে

বগুড়া সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাহবুব আলম শাহীন হত্যা মামলার প্রধান আসামি বগুড়া পৌরসভার প্যানেল মেয়র যুবলীগনেতা আমিনুল ইসলামকে পাঁচদিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। আজ বুধবার দুপুরে বগুড়ার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালত ৩-এর বিচারক বিল্লাল হোসাইন এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এ সময় আমিনুল ইসলামের পক্ষে কোনো আইনজীবী শুনানিতে অংশ নেননি। বগুড়া অ্যাডভোকেট বার সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম জানান, বার সমিতির সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে, কোনো আইনজীবীই খুনিদের আইনি সহায়তা দেবেন না। সে জন্য বিএনপিনেতা মাহবুব আলম শাহীন হত্যাকাণ্ডে প্রধান আসামি আমিনুল ইসলামের পক্ষে কোনো আইনজীবী আদালতে শুনানিতে অংশ নেননি।
গ্রেপ্তার হওয়া আমিনুল ইসলাম জেলা মোটর মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক এবং বগুড়া সদর উপজেলা যুবলীগের সহসভাপতি। তিনি ঢাকা-উত্তরবঙ্গ রুটে চলাচলকারী শাহ ফতেহ আলী পরিবহনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক।
গত ১৪ এপ্রিল রাতে বগুড়া শহরের উপশহর বাজারের দশতলা বিল্ডিং এলাকায় বিএনপিনেতা শাহীনকে কুপিয়ে ও ছুরিকাঘাত করে হত্যা করা হয়। ঘটনার দুদিন পর নিহতের স্ত্রী আক্তার জাহান শিল্পী বাদী হয়ে আমিনুল ইসলামসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। প্রধান আসামি আমিনুল ইসলামকে গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক স্টেডিয়াম এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। আজ বুধবার দুপুর ১২টার দিকে কঠোর নিরাপত্তা ও বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট পরিয়ে তাঁকে বগুড়ার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে হাজির করা হয়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও বগুড়ার উপশহর পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক আমবার হোসেন আমিনুলকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতের কাছে সাতদিনের রিমান্ড চান। বিচারক বিল্লাল হোসাইন শুনানি শেষে পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক আমবার হোসেন জানান, এই মামলায় তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর আগে গ্রেপ্তার হওয়া অপর দুই আসামি পায়েল শেখ ও মো. রাসেল আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।
গত ১৮ এপ্রিল বগুড়া পুলিশ সুপার (এসপি) আলী আশরাফ ভূঁইয়া নিজ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, মোটরমালিক গ্রুপের দ্বন্দ্বের জের ধরেই হত্যাকাণ্ডটি হয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়।
প্রাথমিক জিঙ্গাসাবাদে আসামিরা বলেছেন, ১৪ এপ্রিল সন্ধ্যায় মোটরমালিক গ্রুপের এক নেতার অফিসে গোপন বৈঠক হয়। ওই বৈঠকে শাহীনকে নিষ্ক্রিয় করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। পরিকল্পনা অনুযায়ী ১০ জনের একটি দল মোটরসাইকেল নিয়ে এই হত্যাকাণ্ডে অংশগ্রহণ করে। কিন্তু তখন মোটরমালিক গ্রুপের কোনো নেতার অফিসে এবং সেখানে মোটরমালিক গ্রুপের আরো কোনো নেতা ছিলেন কি না, সেটা তিনি জানাননি।