কামারুজ্জামানের আইনজীবীর হাতে রায়ের কপি

মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ কামারুজ্জামানের আপিলের পূর্ণাঙ্গ রায়ের সার্টিফায়েড কপি পেয়েছেন তাঁর আইনজীবী।
কামারুজ্জামানের আইনজীবী শিশির মনির বার্তা সংস্থা বাসসকে আজ বৃহস্পতিবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ৫৭৭ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায়ের কপি প্রকাশ করেছিলেন আপিল বিভাগ।
গত বছরের ৩ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি (বর্তমানে প্রধান বিচারপতি) সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে চার সদস্যের বেঞ্চ কামারুজ্জামানকে মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ট্রাইব্যুনালের মৃত্যুদণ্ডের রায় বহাল রাখেন। বেঞ্চের অপর তিনজন বিচারপতি হলেন বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞা, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ও বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী। গত ১৮ ফেব্রুয়ারি পূর্ণাঙ্গ রায়ে এ বেঞ্চের বিচারপতিরা স্বাক্ষর করেন। পূর্ণাঙ্গ রায় সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটেও প্রকাশ করা হয়।
রায় প্রকাশের পর কামারুজ্জামানের মৃত্যু পরোয়ানা গত ১৯ ফেব্রুয়ারি ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পৌঁছায়। লাল কাপড়ে মোড়ানো এ পরোয়ানার সঙ্গে কামারুজ্জামানের আপিল মামলার পূর্ণাঙ্গ রায়ের অনুলিপিও পাঠান আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২।
রায় প্রকাশের ১৫ দিনের মধ্যে আসামিপক্ষের রিভিউ আবেদনের সুযোগ রয়েছে। অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম এক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, রিভিউ আবেদনের জন্য ১৫ দিনের সময় থাকলেও রাষ্ট্রপক্ষ এ সময়ের জন্য অপেক্ষা করবে না। রায় কার্যকরে আইনি কার্যক্রম চলবে। তবে এর মধ্যে কেউ রিভিউ করলে তখন রায় কার্যকরের কার্যক্রম স্থগিত হয়ে যাবে।
মানবতাবিরোধী অপরাধে ট্রাইব্যুনালে দণ্ডিতদের মধ্যে কামারুজ্জামান হলেন তৃতীয় ব্যক্তি, আপিল বিভাগে যার মামলার রায় হলো। এর আগে জামায়াতের আরেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লার আপিল নিষ্পত্তির পর ২০১৩ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর যাবজ্জীবন সাজা বাড়িয়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন আপিল বিভাগ। এরপর ২০১৩ সালের ১২ ডিসেম্বর তাঁর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়। গত বছর ১৭ সেপ্টেম্বর আপিলের দ্বিতীয় রায়ে জামায়াতের নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ট্রাইব্যুনালে দেওয়া সাজা মৃত্যুদণ্ড থেকে কমিয়ে তাঁকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেন আপিল বিভাগ।
২০১৩ সালের ৯ মে কামারুজ্জামানকে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে রায় দেন ট্রাইব্যুনাল-২। ওই বছরের ৬ জুন ওই সাজা বাতিল করে খালাস চেয়ে কামারুজ্জামান সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আপিল দায়ের করেন। তবে রাষ্ট্রপক্ষ কোনো আপিল দাখিল করেনি। আসামিপক্ষের শুনানির বিপরীতে বক্তব্য পেশ করে রাষ্ট্রপক্ষ। ট্রাইব্যুনালের দণ্ড বহাল রাখার আর্জি জানিয়েছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
একটি মামলায় ২০১০ সালের ২৯ জুলাই কামারুজ্জামানকে গ্রেপ্তার করা হয়। ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ওই বছর ২ আগস্ট তাঁকে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। সেই থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন।