নিউ বসুন্ধরায় রাখা ৩০ কোটি টাকা ফিরে পেতে মোংলায় সংগ্রাম কমিটি

নিউ বসুন্ধরা রিয়েল এস্টেট লিমিটেডে বিনিয়োগ করে চরম বিপাকে পড়েছেন বাগেরহাটের মোংলার প্রায় ৭০০ গ্রাহক। আমানতের প্রায় ৩০ কোটি টাকা ফেরত পেতে প্রশাসনসহ বিভিন্ন দপ্তরে ধর্না দিচ্ছেন তারা। বিনিয়োগের টাকা ফেরত পেতে ভুক্তভোগীরা গঠন করেছেন সংগ্রাম পরিষদ।
সরকারি অফিসের উমেদার থেকে হাজার কোটি টাকার মালিক হওয়া আব্দুল মান্নান তালুকদারের মালিকানাধীন নিউ বসুন্ধরা রিয়েল এস্টেটে গচ্ছিত টাকা ফেরত পেতে শনিবার দুপুরে মোংলা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করেন ভুক্তভোগী শত শত নারী-পুরুষ।
সংবাদ সম্মেলন শেষে সেখানেই তারা তাদের টাকা ফেরত পাওয়ার দাবিতে সংগ্রাম পরিষদ গঠন করেন। গ্রাহক মমিনুল ইসলামকে আহ্বায়ক ও আলমগীর হোসেন শিকারীকে সদস্য সচিব করে গঠিত ৫১ সদস্য বিশিষ্ট এ সংগ্রাম পরিষদ ধাপে ধাপে বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে তাদের আমানতের টাকা ফেরত পাওয়ার ব্যবস্থা করবেন। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে আইনি প্রক্রিয়া তরান্বিত করার লক্ষ্যে মানববন্ধন, অবস্থান ধর্মঘট, স্মারকলিপি প্রদান ও নিউ বসুন্ধরা রিয়েল এস্টেটের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল মান্নান তালুকদারের কার্যালয় ঘেরাওসহ বিভিন্ন কর্মসূচি।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা জানান, নিউ বসুন্ধরা রিয়েল এস্টেটের কর্নধার বাগেরহাটের আব্দুল মান্নান তালুকদার বাগেরহাট ও মোংলাসহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় কোম্পানির মাঠ কর্মকর্তা এবং দালাল নিয়োগ দিয়ে মোটা অঙ্কের মুনাফার প্রলোভনে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়। লাখ টাকায় প্রতি মাসে অন্তত ২ হাজার টাকা লভ্যাংশসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার আশ্বাসে প্রলুব্ধ হয়ে শুধু মোংলারই ৭০০ গ্রাহক প্রায় ৩০ কোটি টাকা জমা করেছেন এ প্রকল্পে। প্রথম দিকে গ্রাহকদের লভ্যাংশ সঠিকভাবে দেওয়ায় গ্রাহক সংখ্যা দ্রুত বেড়ে যায়। তবে ২০১৮ সালের নভেম্বর থেকে প্রকল্প কর্মকতারা গ্রাহকদের সব লভ্যাংশ ও আসল আমানত ফেরত দেওয়া বন্ধ করে দেয়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন মাঠ পর্যায়ের আমানতকারীরা। একপর্যায়ে গ্রাহকরা বুঝতে পারেন তারা আবদুল মান্নান তালুকদার ও তার সহযোগীদের হাতে প্রতারণার শিকার হয়েছেন।
নানা ভাবে গ্রাহকরা তাদের আমানতের টাকা ফেরত পেতে মাঠ পর্যায়ের কর্মীদের চাপ প্রয়োগ করলে তাদের অধিকাংশই গা ঢাকা দেয়। এরই মধ্যে প্রকল্পের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল মান্নান তালুকদারের নামে দুদকের ১১০ কোটি টাকা মানি লন্ডারিং মামলায় ১৫ জুলাই থেকে তিনি জেলহাজতে রয়েছেন। এতে গ্রাহকরা তাদের আমানত ফেরত পেতে আরো শঙ্কায় পড়েন। আমানতকারীরা তাদের আমানত ফেরত পেতে খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেকসহ স্থানীয় সংসদ সদস্য উপমন্ত্রী বেগম হাবিবুন নাহারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।