সিলেটের জঙ্গি আস্তানা আতিয়া মহলের ঘটনায় অভিযোগপত্র

সিলেটের দক্ষিণ সুরমার শিববাড়ির আতিয়া মহলে জঙ্গিবিরোধী অভিযান চলাকালে ঘরের মধ্যে বোমা বিস্ফোরণে চার জঙ্গি নিহতের ঘটনার মামলায় অভিযোগপত্র দিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। আজ শনিবার দুপুরে সিলেট মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে এই অভিযোগপত্র জমা দেন তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই পরিদর্শক আবুল হোসেন।
এর আগে আতিয়া মহলের অদূরে বিস্ফোরণে পুলিশ কর্মকর্তাসহ নিহত হওয়ার ঘটনায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন ওই কর্মকর্তা।
সে সময় তিনি জানিয়েছিলেন, বোমা বিস্ফোরণকারী জঙ্গিরা মৌলভীবাজারে জঙ্গিবিরোধী অভিযানে নিহত হয়েছেন। ফলে কেউ জীবিত না থাকায় ওই মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।
পিবিআই কর্মকর্তা আবুল হোসেন জানান, বিস্ফোরক মামলায় তিন জঙ্গি নিহতের ঘটনায় অভিযোগপত্রে তিনজনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এরা হলেন বিস্ফোরণে নিহত জঙ্গি মর্জিনার ভাবি আর্জিনা (১৯), মর্জিনার ভাই জহুরুল হক ওরফে জসিম (২৫) ও হাসান (২৬) নামের আরেক জঙ্গি।
আবুল হোসেন আরো জানান, ওই তিনজন চট্টগ্রামের কারাগারে ছিলেন। সিলেটের আতিয়া মহলে ঘটনায় তাদের চলতি বছরের ১৭ জানুয়ারি শ্যেন অ্যারেস্ট দেখানো হয়। পরে রিমান্ডেও নেওয়া হয়েছিল তাদের। বর্তমানে এ তিনজনই কারাগারে আছেন।
জানা গেছে, চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে জঙ্গি হামলার ঘটনায় ২০১৭ সালের ১৫ মার্চ আর্জিনা ও জসিমকে গ্রেপ্তার করা হয়। এছাড়া হাসানকে কুমিল্লার চান্দিনা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। পরে তাঁকে নিয়ে চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে অভিযান চালিয়ে বোমা ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করে পুলিশ।
আবুল হোসেন আরো জানান, অভিযুক্তরা জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ ছিলেন। আতিয়া মহলের চার জঙ্গিকে জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন তাঁরা। এতে মোশাররফ নামের আরেক জঙ্গির সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। তবে তিনি মৌলভীবাজারে জঙ্গিবিরোধী অভিযানে নিহত হন।
প্রসঙ্গত, আতিয়া মহলে ২০১৭ সালের ২৩ মার্চ জঙ্গিবিরোধী অভিযান শুরু হয়। ‘অপারেশন টোয়ালাইট’ নামের ওই অভিযান চলাকালে ২৫ মার্চ সন্ধ্যায় আতিয়া মহলের পাশেই বোমা বিস্ফোরণ ঘটায় জঙ্গিরা। এতে র্যাবের গোয়েন্দা বিভাগের তৎকালীন প্রধান লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবুল কালাম আজাদ ও দুই পুলিশ পরিদর্শকসহ সাতজন নিহত হন। এ ঘটনায় সিলেট মহানগরের মোগলাবাজার থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) শিপলু দাস বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেন। এ ছাড়া আতিয়া মহল থেকে বিস্ফোরক উদ্ধারের ঘটনায় থানার তৎকালীন এসআই সুহেল আহমদ বাদী হয়ে আরেকটি মামলা করেন।