রাজশাহীতে থানার সামনে আত্মহত্যাকারী কলেজছাত্রীর স্বামী গ্রেপ্তার

রাজশাহীতে স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ না নেওয়ায় থানার সামনে প্রকাশ্যে গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যা করেন কলেজছাত্রী লিজা রহমান। সেই আত্মহত্যার প্ররোচণার মামলায় লিজার স্বামী সাখাওয়াত হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার লক্ষ্মীনারায়ণপুর গ্রাম থেকে বৃহস্পতিবার রাত আড়াইটার দিকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত সাখাওয়াত রাজশাহী সরকারি সিটি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র।
রাজশাহী মহানগর পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত উপকমিশনার গোলাম রসূল কুদ্দুস জানান, লিজাকে আত্মহত্যায় প্ররোচণার অভিযোগে করা মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এ মামলায় নিহত লিজার স্বামী ছাড়াও শ্বশুর ও শাশুড়িকে আসামি করা হয়েছে। তাদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান অতিরিক্ত উপকমিশনার।
নিহত লিজার বাবা গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার বুজরুক বোয়ালিয়া গ্রামের বাসিন্দা আলম মিয়া বাদী হয়ে বুধবার রাতে রাজশাহী মহানগরীর শাহ মখদুম থানায় মামলাটি করেন।
সহপাঠীদের তথ্য অনুযায়ী, লিজা ও সাখাওয়াত চলতি বছরে শুরুর দিকে প্রেম করে বিয়ে করেন এবং কিছুদিন পর তাদের মধ্যে কলহ দেখা দেয়। সেইসঙ্গে পরিবারের সম্মতি না পাওয়ায় সাখাওয়াত লিজাকে বাড়িতে নিয়ে যেতে পারেননি। এক পর্যায়ে সাখাওয়াত স্ত্রী লিজার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে গ্রামের বাড়িতে চলে যান।
গত জুলাইয়ে লিজা চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে স্বামীর বাড়িতে গেলে সাখাওয়াত বাড়ি থেকে পালিয়ে যান। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে বিষয়টি মীমাংসা হলেও কয়েকদিন পর সাখাওয়াত রাজশাহী ফিরে আবারো স্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। এক পর্যায়ে ২৮ সেপ্টেম্বর শাহ মখদুম থানায় অভিযোগ জানাতে যান লিজা। কিন্তু অভিযোগ না নেওয়ায় ক্ষোভে ও অপমানে থানা থেকে বেরিয়েই তিনি নিজের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেন।
আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তবে অবস্থার অবনতি হলে ওই দিনই তাঁকে ঢাকায় পাঠানো হয়। এর পর বুধবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।