ড্রেজার মাস্টারকে মারধর, আ.লীগ নেতা কারাগারে

সরকারের অগ্রাধিকার প্রকল্প মংলা-ঘাষিয়াখালী আন্তর্জাতিক নৌপথের বাগেরহাটের রামপাল পুরাতন ঘাট এলাকায় এক ড্রেজার মাস্টারকে মারধর ও সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার ঘটনায় মামলা হয়েছে। ওই ঘটনায় আটক রামপাল উপজেলার পেড়িখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বাবুলকে মামলায় আসামি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টায় বিআইডব্লিউটিএর লাঞ্ছিত ড্রেজার মাস্টার মো. শাহজাহান (৫৫) বাদী হয়ে রামপাল থানায় দ্রুত বিচার আইনে মামলা করেন। এর আগে ওই দিন সন্ধ্যায় বিআইডব্লিউটিএর ওই ড্রেজার মাস্টারকে মারধরের অভিযোগে রামপাল থানা পুলিশ আওয়ামী লীগ নেতা বাবুলকে আটক করে।
বাবুলকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। এদিকে বাবুলের শাস্তির দাবিতে আজ বুধবার দুপুরে রামপালের পেড়িখালী এলাকাবাসী বিক্ষোভ করেন।
রামপাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম জানান, মংলা-ঘাষিয়াখালী নৌপথের রামপাল পুরাতন ঘাট এলাকায় মঙ্গলবার সকালে বিআইডব্লিউটিএর একটি ড্রেজার খননকাজ শুরু করে। এর কিছুক্ষণ পর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পেড়িখালী ইউপির চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম বাবুল তুচ্ছ ঘটনার জের ধরে উচ্ছৃঙ্খল কিছু লোকজন নিয়ে ড্রেজার মাস্টার শাহজাহানকে লাঞ্ছিত করাসহ করে সরকারি কাজে বাধা দেন। এ ঘটনার পর পরই এ নৌপথ খননকাজে নিয়োজিত নয়টি ড্রেজারের মাস্টার ও বিআইডব্লিউটিএর কর্মচারীরা ওই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে খননকাজ কয়েক ঘণ্টা বন্ধ রাখেন।
বাগেরহাটের পুলিশ সুপার মো. নিজামুল হক মোল্লা জানান, সরকারি (বিআইডব্লিউটিএ) কর্মচারীকে মারপিট ও সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে মামলা করা হয়েছে। পুলিশ ওই মামলায় আওয়ামী লীগ নেতা রফিকুল ইসলাম বাবুলকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে রাতেই বাগেরহাটে পাঠায়। বুধবার দিনে তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এ ঘটনার আগে গত বছরের রামপালে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমে দায়িত্বরত অবস্থায় স্কুলশিক্ষিকাকে মারধরের ঘটনায় করা মামলায় রফিকুল ইসলাম বাবুল বেশ কয়েক দিন কারাবাস করেন। এ ছাড়া ওই ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।
এদিকে আওয়ামী লীগ নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম বাবুলের শাস্তির দাবিতে আজ দুপুরে রামপালের পেড়িখালী এলাকাবাসী বিক্ষোভ করে। চেয়ারম্যানের নির্যাতনের শিকার ওই ইউনিয়নের নানা বয়সের নারী-পুরুষ এ বিক্ষোভ করে। বিক্ষোভকারীরা এ সময় বহুল আলোচিত এই চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে নারী, শিশু, বৃদ্ধ, ডাক্তার, শিক্ষক, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার লোকজনকে নির্যাতন করাসহ নানা ধরনের সন্ত্রাসী কার্যকলাপের অভিযোগ তুলে তাঁর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।