কাঁদতে কাঁদতে ভারতে গেলেন তাঁরা

প্রথম দফায় ভারত গেলেন কুড়িগ্রামের অভ্যন্তরের সদ্য বিলুপ্ত দুটি ছিটমহলের ১৫টি পরিবারের ৭২ জন নাগরিক। এরমধ্যে রয়েছে ফুলবাড়ী উপজেলার ১০টি পরিবারের ৪৯ জন এবং ভুরুঙ্গামারী উপজেলার পাঁচটি পরিবারের ২৩ জন।
এসব নাগরিক ভারতে যাওয়ার জন্য আজ রোববার সকাল ১১টায় ভুরুঙ্গামারী উপজেলার বাগভণ্ডার সীমান্তের অস্থায়ী চেক পয়েন্টে পৌঁছান। সেখানে ইমিগ্রেশনের মাধ্যমে তাঁদের ট্রাভেল পাস পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়।
পরে দুপুর দেড়টায় তাঁরা ভারতে উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেন। কাগজপত্র পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে তাঁদের বরণ করেন ভারতের কোচবিহারের জেলা প্রশাসক (ডিএম) পিউল গানাথন, বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনের সচিব অভিজিত মিত্র।
এ সময় বাংলাদেশের পক্ষে কুড়িগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. রফিকুল ইসলাম, ৪৫ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়ন (বিজিবি) কুড়িগ্রামের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. জাকির হোসেন, ফুলবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাছির উদ্দিন মাহমুদ, ভুরুঙ্গামারীর ইউএনও মামুন ভুইয়াসহ জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
যাত্রাকালে আত্মীয়স্বজনসহ সেখানে এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
ফুলবাড়ী উপজেলার বিলুপ্ত দাসিয়ার ছড়া ছিটমহলের বাসিন্দা লক্ষ্মী রানী বলেন, ‘আমার দুই ছেলে, ছেলের বউ এবং নাতি-নাতনিসহ ১০ জন ভারতে যাচ্ছি। যেতে খুব খারাপ লাগছে কিন্তু উপায় নাই। আমার কিছু আত্মীয়স্বজন ভারতে থাকায় সেখানে যেতে হচ্ছে।’
একই এলাকার বাসিন্দা সামছুল হক বলেন, ‘আমরা একই পরিবারের ৯ জন ভারতে যাচ্ছি। আরো চার ভাইসহ বাবা-মা বাংলাদেশে থাকবে। জন্মভূমি ছেড়ে যেতে খুবই খারাপ লাগছে।’
কুড়িগ্রাম জেলার অভ্যন্তরের ১২টি বিলুপ্ত ছিটমহলের মধ্যে শুধু দুটি ছিটমহলের ৬৭ পরিবারের ২৬৫ জন বাসিন্দা ভারতে নাগরিকত্ব নিয়ে ভারতে যাওয়ার প্রস্ততি সম্পন্ন করেছেন। এর মধ্যে প্রথম দফায় আজ গেলেন ৭২ জন। দ্বিতীয় দফায় ২৪ নভেম্বর ভারতে যাবেন দাসিয়ারছড়ার ৩০ পরিবারের ১১৫ জন ও তৃতীয় দফায় যাবেন দাসিয়ার ছড়ার ২৭ পরিবারের ৭৮ জন।
কুড়িগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. রফিকুল ইসলাম জানান, কুড়িগ্রাম জেলার ১২টি বিলুপ্ত ছিমহল থেকে ৩০৫ জন নাগরিকত্ব নিয়ে ভারতে যাওয়ার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত ২৬৫ জন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেন।