নীলফামারীতে বালু উত্তোলনে ভাঙছে ফসলি জমি, বসতভিটা

নীলফামারী সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ড্রেজার মেশিন দিয়ে অবাধে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এতে ভেঙে পড়ছে আশপাশের ফসলি জমি ও বসত ভিটা। গত কয়েক সপ্তাহে জেলার সদর উপজেলার সোনারায় ও ইটাখোলা ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় ড্রেজার মেশিন বসিয়ে দিনরাত বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। ছোট ছোট পুকুরে মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করায় এগুলো গভীর হচ্ছে। এতে ভেঙে পড়ছে পুকুরের পাড়। সেই সঙ্গে ভেঙে পড়ছে আশপাশের ফসলি জমি ও বসত ভিটা।
সরেজমিনে জানা যায়, জেলার সদর উপজেলার ইটাখোলা ইউনিয়নের গাবেরতল বাজারের পাশে বড় ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বাণিজ্যিকভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। নীলফামারী-পঞ্চপুকুর বাজার সড়কঘেঁষা একটি পুকুর থেকে অপরিকল্পিতভাবে মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করায় হুমকির মুখে পড়েছে সড়কটি। এরই মধ্যে সড়কের কিছু অংশ পুকুরে ভেঙে পড়েছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে যেকোনো সময় সড়কটি ভেঙে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে এলাকাবাসী।
এলাকাবাসী জানায়, বালু উত্তোলন করায় ওই পুকুরটি গভীর হওয়ার কারণে সম্প্রতি বকুল নামের এক বয়স্ক ব্যক্তি পানিতে পড়ে ডুবে যায়। পরে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিদল এসে পুকুর থেকে তার লাশ উদ্ধার করে। এ ছাড়া এর পাশেই একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। অব্যাহত মেশিনের শব্দে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে বলে জানান শিক্ষকরা।
গাবেরতল বাজারের ব্যবসায়ীরা জানায়, দীর্ঘদিন ধরে এই এলাকায় বাণিজ্যিকভাবে বালু উত্তোলন করে বিক্রি করা হচ্ছে। উত্তোলন করা বালু ট্রলি ও ট্রাক্টর দিয়ে নিয়ে যাওয়ার কারণে গ্রামীণ সড়ক ও ফসলি জমি নষ্ট হচ্ছে। এ ছাড়া অহরহ এ সড়কে ঘটছে দুর্ঘটনা। তারা জানায়, এ ব্যাপারে প্রশাসনকে জানিয়েও কোনো লাভ হয়নি।
ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলনকারী গাবেরতল গ্রামের আব্দুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমার জমি থেকে আমি বালু উত্তোলন করছি। এতে প্রশাসন ও সাংবাদিকদের কী?’
এ ব্যাপারে ইটাখোলা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান হাফিজুর রশীদ মঞ্জু জানান, পরিষদের পক্ষ থেকে বারবার নিষেধ করার সত্ত্বেও বালু উত্তোলন বন্ধ করা যাচ্ছে না।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাবেত আলী জানান, অভিযোগ পেলে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।