নতুন বই নিতে গিয়ে লাশ হলো শিশু

মায়ের হাতে একটি মিষ্টি খেয়ে বাড়ি থেকে বের হয়েছিল। কথা ছিল নতুন বই নিয়ে বাড়ি ফিরে মায়ের সঙ্গে দুপুরের খাবার খাবে শিশু সোহানা (৭)। সোহানা বাড়ি ফিরেছে। তবে নতুন বই হাতে নয়, লাশ হয়ে।
বই নিতে স্কুলে যাওয়ার পথে একটি অটোবাইক সোহানাকে চাপা দেয়। স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে শরীয়তপুরের ডামুড্যা উপজেলার ছাতিয়ানী গ্রামে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
সোহানার মৃত্যুতে গ্রামজুড়ে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
ডামুড্যা থানার পুলিশ ও নিহতের পরিবার জানায়, শুক্রবার সকাল ৯টায় মায়ের হাতে একটি মিষ্টি খেয়ে নতুন বই আনতে স্কুলের উদ্দেশে বাড়ি থেকে বের হয় জমজ ভাই-বোন সোহানা ও শুভ। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ডামুড্যার আনন্দবাজার এলাকায় রাস্তা পারাপারের সময় চলন্ত একটি অটোবাইক সোহানাকে চাপা দেয়। স্থানীয় লোকজন সোহানাকে উদ্ধার করে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
সোহানা ডামুড্যার ছাতিয়ানী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী ছিল। প্রথম শ্রেণিতে পরীক্ষা দিয়ে দ্বিতীয় শ্রেণিতে উঠেছিল। সোহানা ডামুড্যা উপজেলার ছাতিয়ানী গ্রামের শাহীন সরদারের মেয়ে।
পুলিশ অটোবাইকটি আটক করেছে। তবে চালক পালিয়ে গেছে। এ ঘটনায় ডামুড্যা থানায় একটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
আজ দুপুরে নিহত সোহানার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, উঠানে একটি চাদর দিয়ে ঢাকা সোহানার নিথর দেহখানি পড়ে আছে। সমবেদনা জানাতে ছুটে এসেছেন গ্রামের লোকজন। তাকে ঘিরে স্বজনরা কান্নাকাটি করছেন। সোহানার মা কাকলী বেগম মাটিতে গড়িয়ে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে কাকলী বেগম বলেন, ‘আমার বুকের মানিকটারে অটোঅলায় মাইরা হালাইছে। নতুন বই লইয়া বাড়িতে আইয়া আমার লগে ভাত খাইব কইছিল। আমি অহন কেরে খাওইমু। আমার বুকের মানিকরে ফিরাইয়া দেও।’
ডামুড্যা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শরীফ মোহাম্মদ আশরাফুল আমিন বলেন, ‘অটোবাইকটিকে আটক করা হয়েছে। চালককে আটকের চেষ্টা চলছে। এ ঘটনায় নিহতের পরিবার মামলা করেছে।’