মূল পরিকল্পনাকারীরা খালাস পেয়েছে

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক কাজী আরেফ আহমেদের তিন হত্যাকারীর ফাঁসি হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন তাঁর স্ত্রী রওশন জাহান সাথী। আজ শুক্রবার কুষ্টিয়া থেকে মোবাইল ফোনে এনটিভি অনলাইনের কাছে এ কথা জানান।
রওশন জাহান সাথী বলেন, ‘আইনের প্রতি শ্রদ্ধা করি, আইনকে সম্মান করি। এ রায়ে আমি খুশি কিন্তু আমার দুঃখ, যারা মূল পরিকল্পনাকারী, তারা ক্ষমতাবলে খালাস পেয়েছে। তবে কিছুটা হলেও মনকে বুঝ দিতে পারছি যে, বিচার হচ্ছে।’
মূল পরিকল্পনাকারী কারা এ প্রশ্ন করা হলে কাজী আরেফের সহধর্মিণী বলেন, দৌলতপুরের সাবেক সংসদ সদস্য পচা মোল্লার ছেলে ও তাঁর বেশ কিছু আত্মীয়স্বজন এর সঙ্গে জড়িত ছিলেন। কিন্তু বিএনপি সরকারের আমলে ক্ষমতাবলে খালাস পেয়ে যান।’
সাথী জানান, ‘এত বড় নেতা, তাঁর তো শুধু সন্ত্রাসীরা মারতে পারে না। তিনি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। পাঁচজন আসামি পলাতক রয়েছে, তাঁরা কখনো ভারতে আবার কখনো দৌলতপুরে যাতায়াত করছে।’
সাবেক সংসদ সদস্য রওশন বলেন, ‘কাজী আরেফ একজন মুক্তিযোদ্ধা, রাজনৈতিক নেতা, যিনি একাত্তরে মুজিব বাহিনীর গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান এবং জাসদের নেতা ছিলেন। তাঁকে হত্যা মানে বোঝা যায়, তখন রাজনীতি কোথায় ছিল।’
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে কাজী আরেফের খুনি সাফায়েত হোসেন হাবিব, আনোয়ার হোসেন ও রাশেদুল ইসলাম ঝন্টুর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগার কর্তৃপক্ষ।
১৯৯৯ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার কালিদাসপুরে জাসদের একটি সমাবেশে দুর্বৃত্তরা ব্রাশফায়ার করলে কাজী আরেফসহ পাঁচজন নিহত হন। ঘটনার পরদিন কুষ্টিয়ার দৌলতপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ ইসহাক আলী বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। মামলার বিচার শেষে কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত দায়রা জজ ২০০৪ সালের ৩০ আগস্ট ১০ আসামিকে ফাঁসি ও ১১ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেন। পরে একজনকে খালাস দিয়ে অপর নয়জনের ফাঁসির আদেশ বহাল রাখেন হাইকোর্ট। এ ছাড়া নিম্ন আদালতে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ১১ জনের সবাইকে হাইকোর্ট খালাস দেন।
হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে কারাবন্দি তিনজনের আপিল আবেদন খারিজ করে মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রাখেন আপিল বিভাগ। এ ছাড়া যাবজ্জীবন সাজা পাওয়া ১১ জনের সবাইকে হাইকোর্ট খালাস দিয়ে যে রায় দেন, সে রায়ও বহাল রাখেন আপিল বিভাগ।