কাজী আরেফ হত্যায় তিনজনের ফাঁসি কার্যকর

মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি কাজী আরেফ আহমেদসহ পাঁচ হত্যা মামলায় তিনজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার রাতে তাঁদের ফাঁসি কার্যকর করে কারা কর্তৃপক্ষ।
রাত ১২টা ৩৫ মিনিটে যশোরের জেলা প্রশাসক ড. হুমায়ুন কবির এবং পুলিশ সুপার মো. আনিসুর রহমান যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতর থেকে বেরিয়ে আসনে। এ সময় তাঁরা গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি। কিছুক্ষণ পর যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার শাজাহান আহমেদ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির বরাতে মৃত্যুদণ্ডাদেশ কার্যকরের বিষয়টি চূড়ান্তভাবে নিশ্চিত করেন। এ সময় তিনি জানান, মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়া আসামিদের মৃতদেহ ধর্মীয় বিধান অনুযায়ী দাফনের জন্য মৃতদের আত্মীয়দের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে দেওয়া হবে।
ফাঁসি কার্যকর হওয়া তিন আসামি হলেন—সাফায়েত হোসেন হাবীব, আনোয়ার হোসেন ও রাশেদুল ইসলাম ঝন্টু। তাঁদের মধ্যে রাত ১১টা ১ মিনিটে প্রথম দুজনের এবং রাত ১১টা ৪৫ মিনিটে তৃতীয়জনের ফাঁসি কার্যকর করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন যশোর জেলা প্রশাসক ড. হুমায়ুন কবির, পুলিশ সুপার মো. আনিসুর রহমান ও সিভিল সার্জন শাহাদাৎ হোসেন। যশোর কেন্দ্রীয় কারাগার সূত্র এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে।
এ মামলার আরেক আসামি ইলিয়াস হোসেন কারাগারে মারা গেছেন। বাকি পাঁচজন পলাতক।
১৯৯৯ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার কালিদাসপুরে জাসদের একটি সমাবেশে দুর্বৃত্তরা ব্রাশফায়ার করলে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক কাজী আরেফসহ পাঁচজন নিহত হন। ঘটনার পরদিন কুষ্টিয়ার দৌলতপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ ইসহাক আলী বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। মামলার বিচার শেষে কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত দায়রা জজ ২০০৪ সালের ৩০ আগস্ট ১০ আসামিকে ফাঁসি ও ১১ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেন। পরে একজনকে খালাস দিয়ে অপর নয়জনের ফাঁসির আদেশ বহাল রাখেন হাইকোর্ট। এ ছাড়া নিম্ন আদালতে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ১১ জনের সবাইকে হাইকোর্ট খালাস দেন।
হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে কারাবন্দি তিনজনের আপিল আবেদন খারিজ করে মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রাখেন আপিল বিভাগ। এ ছাড়া যাবজ্জীবন সাজা পাওয়া ১১ জনের সবাইকে হাইকোর্ট খালাস দিয়ে যে রায় দেন, সে রায়ও বহাল রাখেন আপিল বিভাগ।