পৌর নির্বাচনে আ. লীগের জয়, জনগণের পরাজয়

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেছেন, গত ৩০ ডিসেম্বরে পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বিজয়ী হলেও এতে জনগণ পরাজিত হয়েছে।
আজ শনিবার দুপুরে রাজশাহী মহানগর বিএনপির কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে রিজভী আহমেদ এ কথা বলেন। এ সময় তিনি আগামী ১২ জানুয়ারি দেশের বিভিন্ন স্থানে স্থগিত হওয়া পৌরসভার নির্বাচন সুষ্ঠু করতে নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
রাজশাহী মহানগর বিএনপি নেতাদের উপস্থিতিতে সংবাদ সম্মেলনে রিজভী আহমেদ বলেন, ‘নোয়াখালীর চৌমুহনী, নরসিংদীর মাধবদীসহ স্থগিত হওয়া পৌরসভাগুলোয় বিভিন্ন সংস্থার সহায়তায় আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের নির্বাচিত করতে সরকার মরিয়া হয়ে উঠেছে। এসব পৌরসভায় বিএনপি প্রার্থীরা প্রচার চালাতে পারছেন না।’
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘নোয়াখালীর চৌমুহনীতে সরকারের একটি সংস্থার প্রধানের ভাই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এ কারণে সেখানে তাঁকে বিজয়ী করার জন্য সেখানে ২০টি কেন্দ্রের মধ্যে ১০টি কেন্দ্রের নির্বাচন শেষ হয়েছে। বিএনপি প্রার্থী হারুণ এগিয়ে আছেন। বাকি ১০টি কেন্দ্রের ভোট স্থগিত করা হয়েছে। সেই স্থগিত কেন্দ্রের নির্বাচন ১২ তারিখে। একটি সংস্থার প্রধানের ভাইকে বিজয়ী করার জন্য নানাবিধ চক্রান্ত করা হচ্ছে। সেখানে বিএনপি প্রার্থীকে প্রচার করতে দেওয়া হচ্ছে না।’
রিজভী বলেন, ‘নির্বাচনের মাঠ মসৃণ করার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। আর সরকারের দায়িত্ব হচ্ছে তাদের সহযোগিতা করা। সেটি না করে সরকার নিজের ইচ্ছে পূরণের জন্য এখনো পর্যন্ত তাণ্ডব চালিয়ে যাচ্ছে। যে তাণ্ডবের মধ্য দিয়ে ৩০ জানুয়ারি জনগণের বিজয়কে তারা ছিনিয়ে নিয়েছে। আমরা বারবার বলছি, ওই নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ বিজয়ী হয়েছে। জনগণ পরাজিত হয়েছে।
রাত ১২টার মধ্যে ব্যালট বাক্স পূর্ণ। ভোর ৩টার মধ্যে ব্যালট পেপারে সিল মারা হয়েছে। তার পরের দিন সকাল ১০টার সময় পুকুর থেকে ব্যালট পেপার উদ্ধার করা হয়েছে।’
কারচুপির আশঙ্কা নিয়েই গণতন্ত্রের স্বার্থে বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেন উল্লেখ করে বিএনপির মুখপাত্র রিজভী আহমেদ বলেন, ‘এই নির্বাচনের যে প্রকৃতি তা তো আপনারা দেখেছেন। একদিকে তো চলেছে তাণ্ডব, রাহাজানি, লুটপাট, ভোটকেন্দ্র দখল, ব্যালট বাক্স নিয়ে যাওয়া। অন্যদিকে বিরোধী দলের নেতাকর্মী ও ধানের শীষের সমর্থকদের ওপর চলেছে সীমাহীন অবর্ণনীয় সরকারি ও আওয়ামী দোসরদের নির্যাতন। এই পরিস্থিতি পার করে আমরা গণতন্ত্রের সামান্য একটু পরিসর পাওয়ার জন্য এই নির্বাচন করেছি। আমরা জানি, তারা ছিনতাই করে নেবে, মানুষের বিজয়কে তারা আত্মসাৎ করবে।
তারপরও আমরা মনে করছি নির্বাচনগুলো করব। কারণ স্থানীয় নির্বাচনগুলো যে দল সরকারে থাকে সেই দলের সময় আমরা নির্বাচন করছি।’
নির্বাচন কমিশনের ভূমিকার সমালোচনা করে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আরো বলেন, ‘সরকারের পেটোয়া হয়েই কাজ করছে নির্বাচন কমিশন। এই কাজ করতে গিয়ে সরকারের আনন্দের ঢাকঢোল বাজাচ্ছে নির্বাচন কমিশন। সরকার আনন্দিত হচ্ছে, সন্ত্রাস করে মানুষের ভোট ছিনিয়ে নিয়ে।’