চট্টগ্রামে হাসপাতালে ধর্মঘট অব্যাহত রাখার ঘোষণা

ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যুর অভিযোগে সার্জিস্কোপ হাসপাতালের দুই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে চট্টগ্রামে ধর্মঘট অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) চট্টগ্রাম শাখা এ ঘোষণা দিয়েছে।
আজ চিকিৎসকদের এই ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিন ছিল। দুপুরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মিলনায়তনে বিএমএ চট্টগ্রাম শাখার নেতা ও জ্যেষ্ঠ চিকিৎসকদের এক জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতি ড. মুজিবুল হক খান বলেন, ‘আগামী শনিবার পর্যন্ত আমাদের এই আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। এর মধ্যে দুই চিকিৎসকের ওপর থেকে মামলা প্রত্যাহার না হলে কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হবে।’
বিএমএ নেতারা বলেছেন, রোগীর মৃত্যুর পর তার স্বজনদের কাছে সমবেদনা জানানো হয়েছে। তারপরও হত্যা মামলা ও রোগীর স্বজনদের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে হামলাসহ ভাঙচুরের ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় উদ্বিগ্ন বলে জানান চিকিৎসক নেতারা।
এদিকে চিকিৎসকদের এই কর্মসূচির কারণে বন্ধ রয়েছে নগরীর বেসরকারি হাসপাতাল ও রোগ নির্ণয় কেন্দ্রের সেবা কাজ। চিকিৎসা ব্যবস্থা অচল হয়ে যাওয়ায় দুর্ভোগ বেড়েছে রোগীদের। সকাল থেকে এসব প্রতিষ্ঠানের ফটক বন্ধ করে দেওয়ায় রাস্তায় ভিড় জমে রোগীদের। সরকারি হাসপাতাল ধর্মঘটের আওতামুক্ত রাখা হলেও সেখানেও চিকিৎসা ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে বলে অভিযোগ রোগীদের।
চিকিৎসা নিতে আসা কয়েকজন জানান, হঠাৎ করে চিকিৎসাসেবা বন্ধ করে দেওয়ায় আমরা বিপাকে পড়েছি। ঘোষণা দিয়ে তাদের এই ধর্মঘট শুরু করা উচিত ছিল।
৯ জানুয়ারি নগরীর পাঁচলাইশ থানাধীন কাতালগঞ্জ এলাকার সার্জিস্কোপ হাসপাতালের ইউনিট ১-এ সন্তান প্রসবের জন্য ভর্তি করা হয় মেহেরুনেছা রিমাকে। রিমার স্বজনদের অভিযোগ, ১০ জানুয়ারি রাতে সন্তান প্রসবের জন্য অস্ত্রোপচার কক্ষে নেওয়া হয় প্রসূতি রিমাকে। কিন্তু রাতে অস্ত্রোপচার না করে চিকিৎসক শামীমা সিদ্দিকী রোজী অন্য জায়গায় চলে যান। পরের দিন ১১ জানুয়ারি ভোরে এসে তাড়াহুড়া করে রিমার শরীরে অস্ত্রোপচার করেন তিনি। এ সময় রিমা একটি সুস্থ সন্তান জন্ম দেন। কিন্তু চিকিৎসকদের ভুল চিকিৎসার কারণে বিকেলের দিকে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ শুরু হয়,পরে চিকিৎসক রোজী আবারও জরায়ুতে অস্ত্রোপচার করেন। এ সময় অবস্থার আরো অবনতি হয়ে রিমা মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।
এ ঘটনায় চিকিৎসকের অবহেলার অভিযোগে সংশ্লিষ্ট ডা. শামীমা রোজী ও ডা. মাহবুবুল আলমের বিরুদ্ধে মামলা করেন নিহতের বাবা খাইরুল বাশার।
দুই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে গতকাল বুধবার বিকেল থেকে আন্দোলন শুরু করে চিকিৎসকদের সংগঠন বিএমএ। চিকিৎসক ধর্মঘটে সমর্থন জানিয়েছে বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক প্রতিষ্ঠানগুলো।