সীমান্তে ভাষার জয়গান
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে ভাষার টানে দুই বাংলার হাজার হাজার ভাষাপ্রেমী মানুষ মিলেমিশে একাকার হয়ে গেল যশোরের বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল সীমান্তের শূন্যরেখায়। আজ রোববার সকালে সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়া উপেক্ষা করে দলে দলে মানুষ যোগ দেন একুশের মিলনমেলায়।
সকালে সীমান্তের শূন্যরেখায় অস্থায়ী শহীদ বেদিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান দুই দেশের সরকারের প্রতিনিধি, রাজনৈতিক-সামাজিক-সাংস্কৃতিক নেতারা। বাংলাদেশের বেনাপোল ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বনগাঁও পৌরসভা যৌথভাবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। দুই দেশের সীমান্ত এলাকা ফেস্টুন, ব্যানার, প্ল্যাকার্ড, আর ফুল দিয়ে বর্ণিল সাজে সাজানো হয়। এ উপলক্ষে সীমান্তে নেওয়া হয় কড়া নিরাপত্তাব্যবস্থা।
অস্থায়ী শহীদ বেদিতে সকাল ৯টায় প্রথম ফুল দিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান ভারতের পশ্চিমবঙ্গ সরকারের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণমন্ত্রী উপেন্দ্রনাথ বিশ্বাস ও বাংলাদেশের আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল-আলম-হানিফ।
সকালে ভাষা দিবসের মিলনমেলায় দুই দেশের বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানায়। দুই দেশের সীমান্তরেখা ভুলে নিরাপত্তাবেষ্টনী পেরিয়ে ভাষাপ্রেমীরা এসে একে অপরকে বুকে জড়িয়ে ধরেন। ফুলের পাপড়ি ছিটিয়ে মিষ্টি বিতরণ করে একে অপরকে বরণ করে নেন। এ সময় সেখানে এক আবেগঘন পরিবেশের তৈরি হয়।
এ সময় সেখানে আরো উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের বনগাঁও অঞ্চলের সংসদ সদস্য মমতা ঠাকুর, উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার সভাধিপতি রহিমা মণ্ডল, বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস, বনগাঁও পৌরসভার মেয়র শংকর আর্য, ভাইস চেয়ারম্যান গোপাল ব্যানার্জি প্রমুখ। অপরদিকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সদস্য এস এম কামাল হোসেন, সহসম্পাদক আবদুল মজিদ, বেনাপোল বন্দরের পরিচালক নিতাই চন্দ্র সেন, বেনাপোল পৌরসভার মেয়র আশরাফুল আলম লিটন, যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার, সংগীতশিল্পী সৈয়দ আবদুল হাদী, ফকির আলমগীর ও নাট্যব্যক্তিত্ব পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ।
পরে সেখানে আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন বেনাপোল পৌরসভার মেয়র আশরাফুল আলম লিটন।
সেখানে একই মঞ্চে দুই দেশের শিল্পীরা গাইলেন ভাষার জয়গান।
ভারতের প্রতিনিধিরা তাঁদের বক্তব্যে বলেন, দুই বাংলার একই আকাশ, একই বাতাস। দুই বাংলার মানুষের ভাষা এক। আমরা বাংলা ভাষায় কথা বলি বলে বাংলাদেশের মানুষের জন্য আমাদের প্রাণ কাঁদে। তাই বারবার এখানে ছুটে আসি।