পাবনা বইমেলায় বিক্রি হয়েছে কোটি টাকার বই

ভাঙল এক মাসের মিলনমেলা। কোটি টাকার বই বিক্রি, বিপুল পাঠক সৃষ্টি ও প্রতিদিন মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ নানা উৎসবের সমাপ্তি ঘটল। আজ সোমবার রাতে শেষ হলো মাসব্যাপী বইমেলা।
ভাষার মাসজুড়ে বইমেলা যেন পাবনাবাসীর প্রাণের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছিল। সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে জমজমাট ছিল মেলা প্রাঙ্গণ। বিকেল হলেই বইপ্রেমীদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। জেলার ঐতিহ্যবাহী ১২৫ বছরের অন্নদা গোবিন্দ পাবলিক লাইব্রেরির উদ্যোগে ও বইমেলা উদযাপন পরিষদের ব্যবস্থাপনায় বইমেলা অনুষ্ঠিত হয়।
পয়লা ফেব্রুয়ারি থেকে পাবনার বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম বকুল পৌর মুক্তমঞ্চ চত্বরে এই মেলার আয়োজন করা হয়। পাশাপাশি চলে সপ্তাহব্যাপী অন্নদা গোবিন্দ পাবলিক লাইব্রেরির বই প্রদর্শনী।
সোমবার রাতে বইমেলা উদযাপন পরিষদের সভাপতি প্রফেসর শিবজিত নাগের সভাপতিত্বে মেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পাবনার জেলা প্রশাসক রেখা রানী বালো। বিশেষ অতিথি ছিলেন পুলিশ সুপার আলমগীর কবির। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন অন্নদা গোবিন্দ পাবলিক লাইব্রেরির সম্পাদক ও দৈনিক জোড়বাংলার সম্পাদক আবদুল মতিন খান, বীর মুক্তিযোদ্ধা হাবিবুর রহমান হাবিব, বইমেলা উদযাপন পরিষদের সম্পাদক আবদুল হান্নান। প্রাণবন্ত অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন অ্যাডভোকেট মুশফেকা জাহান কণিকা ও ড. হাবিবুল্লাহ। আর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন প্রলয় চাকী।
একাধিক বই বিক্রেতা আর প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী জানান, প্রতিদিন গড়ে আড়াই থেকে তিন লাখ টাকার বই বিক্রি করেছেন তাঁরা। শিশুতোষ বই, গল্পের বই, বিভিন্ন ব্যক্তির জীবনী, উপন্যাস ও মুক্তিযুদ্ধের বই বিক্রি হয়েছে বেশি। এবারের বইমেলায় প্রায় এক কোটি টাকার বেশি বই বিক্রি হয়েছে বলে তাঁরা দাবি করেন।
পাবনার মাসব্যাসী এই বইমেলার ব্যতিক্রমধর্মী কিছু আকর্ষণের মধ্যে স্কুলশিক্ষক, কলেজশিক্ষক, স্কুলছাত্র, কলেজছাত্র, চিকিৎসক, ইঞ্জিনিয়ার, সাংবাদিক, কবি, লেখক, প্রকাশক, শিল্পী, বিভিন্ন নৃগোষ্ঠী, ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ, স্কুল ও কলেজের লাইব্রেরিয়ান, বই ব্যবসায়ীদের জন্য ছিল প্রতিদিন আলাদা অলাদা বই পড়া নিয়ে ব্যতিক্রমী আলোচনা সভা। এ ছাড়া মেলায় জেলার বিভিন্ন উপজেলার কমবেশি সাংস্কৃতিক সংগঠনের পরিবেশনায় ছিল মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানমালা।
মেলামঞ্চের বিভিন্ন দিনে নবীন-প্রবীণ লেখকদের বইয়ের মোড়ক উন্মোচনের ব্যবস্থা ছিল। মাসব্যাপী এই বইমেলা প্রতিদিন দুপুরের পর থেকেই দর্শক, পাঠকসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের আনাগোনায় পুরো ময়দান কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়।
উল্লেখ্য, পয়লা ফেব্রুয়ারি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও যুক্তরাজ্যের সাবেক হাইকমিশনার প্রফেসর ড. এম সাইদুর রহমান খান মাসব্যাপী এই বইমেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছিলেন।