মংলায় বাল্যবিবাহ থেকে রক্ষা পেল দুই স্কুলছাত্রী

গতকাল শুক্রবার বিয়ে হওয়ার কথা ছিল বাগেরহাটের মংলা উপজেলার নবম শ্রেণির দুই ছাত্রী সাদিয়া ও তারামনির। সব আয়োজনও চূড়ান্ত। কিন্তু মংলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) নির্দেশে উপজেলার দুই কর্মকর্তা ও বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের হস্তক্ষেপে শেষ পর্যন্ত দুই কিশোরী বাল্যবিবাহ থেকে রক্ষা পেয়েছে।
মংলার মিঠাখালী গ্রামের শিরিয়া বেগম মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক ওবায়দুল ইসলাম বলেন, ‘তাঁর বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর দুই ছাত্রীর মা-বাবা গোপনে শুক্রবার তাদের বিয়ে ঠিক করে। ওই দুই ছাত্রীর বান্ধবীরা বিদ্যালয়ে এসে এ কথা জানায়। সঙ্গে সঙ্গে আমি বিষয়টি মংলার ইউএনওকে জানাই। এরপর ইউএনও বিয়ে বন্ধ করার জন্য উপজেলা তথ্য ও প্রযুক্তি কর্মকর্তা খান মোয়াজ্জাম হোসেন রাসেল ও মিঠাখালী ইউনিয়নের দত্তের মেঠের ভূমি কর্মকর্তা পিন্টু কুমার সাহাকে বিদ্যালয়ে পাঠান। তাঁরা বিদ্যালয়ে এসে ওই দুই ছাত্রীর মা-বাবাকে সেখানে খবর দিয়ে ডেকে আনেন। সেখানে উপস্থিত সবার সামনে এক ছাত্রীর বাবা শহিদুল ইসলাম ও আরেক ছাত্রীর মা কুলসুম বেগম স্বীকার করেন, তাঁরা বাল্যবিবাহ দিতে গিয়ে ভুল করেছেন। তাঁরা লিখিত অঙ্গীকারনামায় বলেছেন, ১৮ বছরের আগে তাঁরা আর মেয়ের বিয়ে দেবেন না। তাঁরা বলেছেন, গ্রামের পরিবেশ ও আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারণে এ ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত গতকাল শুক্রবার তাঁরা আর তাঁদের মেয়ের বিয়ে দেননি।
মংলার ইউএনও মুহাম্মদ আলী প্রিন্স বলেন, ‘মংলা উপজেলার মিঠাখালী ইউনিয়ন ও চিলা ইউনিয়নে বাল্যবিবাহের হার অনেক বেশি। আমি উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব জনপ্রতিনিধি ও শিক্ষকদের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখার জন্য বলেছি। সবাই সহযোগিতা করলে এ উপজেলায় বাল্যবিবাহ বন্ধ করা সম্ভব। আর বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে আমার চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।’