চলন্ত বাসে গণধর্ষণ, ৫ শ্রমিক নেতা জেলহাজতে

টাঙ্গাইলের মধুপুরে চলন্ত বাসে পোশাককর্মী গণধর্ষণের ঘটনায় পাঁচ শ্রমিক নেতাকে জেলহাজতে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। আজ বুধবার সকালে শ্রমিক নেতারা আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের জন্য আবেদন করলে টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম মো. হামিদুল ইসলাম তাদের আবেদন নাকচ করে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
গণধর্ষণ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ধনবাড়ী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) খান মোহাম্মদ হাসান মোস্তফা জানান, সকালে মামলার অন্য ছয় আসামির মধ্যে লতিফ মুন্সি, সেলিম, জালু, মিলিটারি সেলিম ও ইলিয়াস আদালতে হাজির হন। পরে বিচারকের নির্দেশে তাঁদের সবাইকে জেলহাজতে পাঠানো হয়। তিনি জানান, পোশাককর্মীকে গণধর্ষণ মামলায় এখন শুধু লাবলু নামের এক আসামি পলাতক।
গত ৩১ মার্চ বৃহস্পতিবার গাজীপুর থেকে খালার বাড়ি টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী বেড়াতে যান ওই পোশাককর্মী। পরদিন ১ এপ্রিল সকালে গাজীপুরের উদ্দেশে যাওয়ার জন্য ধনবাড়ী বাসস্ট্যান্ড থেকে টিকেট কেটে বিনিময় পরিবহনের ১৯৫৪ সিরিয়ালের একটি বাসে ওঠেন। এ সময় বাসটির চালক ও চার কর্মী ওই নারীকে একাই নিয়ে রওনা হন। পরে বাসটি গন্তব্যে না গিয়ে টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ সড়কের দিকে যেতে থাকে। এতে পোশাককর্মী জিজ্ঞেস করলে বাসের কর্মীরা তাঁকে মারধর করেন এবং সব জানালা-গেট বন্ধ করে দিয়ে তাঁর হাত-পা ও মুখ বেঁধে ফেলেন। পরে একে একে বাসের চালক ও অন্য তিনজন তাঁকে ধর্ষণ করে বাস থেকে নামিয়ে দিয়ে চলে যান।
খবর পেয়ে ওই নারীর স্বামী টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ সড়ক থেকে স্ত্রীকে উদ্ধার করেন। এরপর দুপুরে এ ঘটনার বিচার চেয়ে টাঙ্গাইল বাসশ্রমিক সংগঠনের কার্যালয়ে গেলে বিষয়টি মীমাংসার জন্য আগামী ৬ এপ্রিল দিন ধার্য করেন শ্রমিক নেতারা। পরে বিকেলে তিনি স্ত্রীকে টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।
পরে এ ঘটনায় পোশাককর্মীর স্বামী বাদী হয়ে অভিযুক্ত চালক, সুপারভাইজার ও সহকারীসহ নয়জনকে আসামি করে ধনবাড়ী থানায় একটি মামলা করেন। মামলার পরপর পুলিশ বাসচালক বাসচালক হাবিবুর রহমান নয়ন, সহকারী আবদুল খালেক ভুট্টো ও বাসের সুপারভাইজার রেজাউল করিম জুয়েলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তিনজনই পোশাককর্মী গণধর্ষণের সঙ্গে জড়িত থাকার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।