বঙ্গবন্ধু প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে সংঘর্ষ, ১০ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার

গোপালগঞ্জে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে সংঘর্ষের ঘটনায় ১০ শিক্ষার্থীকে কেন বহিষ্কার ও সাজা প্রদান করা হবে না এ বিষয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আজ রোববার দুপুরে ওই শিক্ষার্থীদের নোটিশ দেওয়া হয়। এ আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে আগামী সাতদিনের জন্য কর্মবিরতির কর্মসূচি স্থগিত করেছে কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ।
প্রশাসন ফলিত-পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র জাহাঙ্গীর আলম, পরিসংখ্যান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র সভ্যসাচী রায়, একই বর্ষের ইংরেজি বিভাগের সম্রাট বিশ্বাস ও গণিত বিভাগের মাহাদী হাসানকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের নির্দেশ দিয়েছে। মেহেদী হাসান মারুফ, আমির হামজা, রহমত শরীফকে এক সেমিস্টারের পাশাপাশি হল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হয়েছে। নাজমুল ইসলাম সুজন, ইমন, অমিতাভ গাইনকেও হল থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হয়েছে। তবে তাঁদের আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য সাতদিনের সুযোগ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে গত ৬ এপ্রিল ছাত্রদের দুই গ্রুপের মধ্যে এই সংঘর্ষের সময় কর্মচারী সুলতান ইসলামকে মারধর ও বিশ্ববিদ্যালয় ভাঙচুরের ঘটনায় চতুর্থ দিনের মতো কর্মবিরতি ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিক্ষুব্ধ ছাত্র ও কর্মচারীরা ওই শিক্ষার্থীদের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়ার সমালোচনা করেছে।
সমাবেশ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবি জানানো হয়। এ সমাবেশে কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক নজরুল ইসলাম হীরাসহ অন্য নেতারা বক্তব্য দেন।
চলমান আন্দোলনের সমর্থনে সাধারণ শিক্ষার্থীরা কর্মবিরতির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে দুই ঘণ্টা ক্লাস বর্জন এবং বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. নুর-উদ্দীন আহমেদ বলেন, তদন্ত কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী চারজন ছাত্রকে আজীবন বহিষ্কার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। খুব শিগগিরই এই আন্দোলন বন্ধ হয়ে যাবে। বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীদের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিতে হবে। তাই তাদের সাতদিনের সময় দেওয়া হয়েছে।
কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক নজরুল ইসলাম হীরা বলেন, ‘কিছু উচ্ছৃঙ্খল ছাত্র আমাদের এক কর্মচারী ভাইকে লাঞ্ছিত করেছে। এরই প্রতিবাদে আমরা কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এই আন্দোলন, কর্মবিরতি করছি। এই ছাত্ররাই আগে বঙ্গবন্ধুর ছবি ভেঙেছিল এবং এই ঘটনার মামলার আসামিও তারা। যতক্ষণ পর্যন্ত তাদের আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা না হবে, ততদিন পর্যন্ত এই আন্দোলন চলবে।’
উল্লেখ্য, ফরিদ মল্লিক নামে এক ছাত্রকে মারধরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত ৬ এপ্রিল রাতে ও পরদিন বৃহস্পতিবার দুপুরে জাহাঙ্গীর গ্রুপ ও ঈশা গ্রুপের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় প্রশাসনিক ভবন ও দুটি হলে ব্যাপক ভাঙচুর করা হয়। এতে শিক্ষার্থী ও কর্মচারীসহ পাঁচজন আহত হয়।