রাবিতে ৫টার মধ্যে অনুষ্ঠান শেষ করার নির্দেশ

নিরাপত্তার কথা বলে পহেলা বৈশাখে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়েও (রাবি) বিকেল ৫টার মধ্যে অনুষ্ঠান শেষ করার নির্দেশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাসহ সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক আবু বকর সিদ্দিক শিমুল বলেন, রাবি প্রশাসন শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে না পেরে দায় এড়ানোর কাজ করছে। যে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ সে প্রাণগুলো রুমের মধ্যে আটকা থাকলে প্রশাসনের তো আর কোনো চিন্তা নেই।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক তমাশ্রী দাস বলেন, ‘রাষ্ট্রের এ রকম সিদ্ধান্ত সামষ্টিক অধিকার ও ব্যক্তিগত স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপের শামিল।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের শের-ই-বাংলা হলের শিক্ষার্থী নাজমুল হাসান রানা বলেন, ‘বিষয়টা অনেকটা চোরের ভয়ে ঘর পালানোর মতো। এটা কোনো সমাধান হতে পারে না। ক্যাম্পাসে চোর-বাটপার, আইনি-বেআইনি সন্ত্রাসী সংগঠন সবই আছে, তারা তাদের মতো সব অপকর্ম চালিয়েও যাচ্ছে। অথচ নিরাপত্তার নামে শিক্ষার্থীদের ঘরে বন্দি করে রাখা। আমরা শিক্ষার্থীরাও সুবোধ বালকের মতো তা মেনেও নিচ্ছি। আমরা নিজেদের দমন করেই এখন তৃপ্ত!’
সমাজবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শিশির মাহমুদ রাজ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে পারছে না। তাই তাদের ঘরের ভেতরে আটকে রাখতে চায়। বাঙালির এ বৃহৎ উৎসব উদযাপনেও ধীরে ধীরে আমরা বাধার মুখে পড়ছি।’
পহেলা বৈশাখের দিন বিকেল ৫টার মধ্যে সব কর্মসূচি শেষ করার জন্য আজ বুধবার সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন দোকান ও স্টলে প্রচার করা হয়। ছাত্রী হলগুলোতে শিক্ষার্থীদের ডেকে বিকেল ৫টার মধ্যে অনুষ্ঠান শেষ করে হলে ফেরা, বড় ব্যাগ ব্যবহার না করার জন্য প্রাধ্যক্ষদের পক্ষ থেকেও বলা হয়েছে বলে শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন।
প্রক্টর অধ্যাপক মজিবুল হক আজাদ খান বলেন, ‘স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ অনুযায়ী ক্যাম্পাসের সবাইকে ৫টার মধ্যে অনুষ্ঠান শেষ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অন্ধকার নেমে এলে দুষ্কৃতকারীদের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটানোর সুযোগ বেড়ে যায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও রাজশাহী নগরের যারা ক্যাম্পাসে বৈশাখ উদযাপন করতে আসবে তাদের সার্বিক নিরাপত্তার স্বার্থেই এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’