নৌযান মালিকদের ধর্মঘট ষষ্ঠ দিন অব্যাহত
নৌযান শ্রমিকদের বেতন বাড়াতে সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ষষ্ঠ দিনের মতো ধর্মঘট অব্যাহত রেখেছেন নৌযান মালিকরা। আজ সোমবার দেশের অন্যান্য স্থানের মতো আশুগঞ্জেও শতাধিক পণ্যবাহী জাহাজ আটকে আছে। এতে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।
আশুগঞ্জ বন্দরের ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মাদ জালাল উদ্দিন জানান, আশুগঞ্জ বন্দরে ৭০টি জাহাজ আটকা পড়েছে। এসব জাহাজে ২৫ থেকে ৩০ কোটি টাকার পণ্য আছে। এর মধ্যে আছে পাথর, সিমেন্ট তৈরি কাঁচামাল, বালুসহ বিভিন্ন পণ্য।
শ্রম মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে নৌযান শ্রমিকদের বেতন পুনর্নির্ধারণ এবং স্থানীয়ভাবে তৈরি বালুবাহী নৌকায় অন্য পণ্য পরিবহনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে কার্গোজাহাজ মালিক সমিতি গত ২৭ এপ্রিল থেকে এ ধর্মঘট অব্যাহত রেখেছে।
সম্প্রতি নৌযান শ্রমিকদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান এক বৈঠকে বিভিন্ন শ্রেণির শ্রমিকদের বেতন নির্ধারণ করে দেন। তবে তা মানেননি নৌযান মালিকরা।
সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ‘ক’ শ্রেণির জাহাজ শ্রমিকদের মূল বেতন ১০ হাজার টাকা, ‘খ’ শ্রেণির সাড়ে নয় হাজার ও ‘গ’ শ্রেণির শ্রমিকদের মূল বেতন নয় হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
নৌযান মালিকদের অভিযোগ, সরকারের নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বেতন পরিশোধ করতে হলে বছরে জাহাজপ্রতি ব্যয় বাড়বে প্রায় ছয় লাখ টাকা। এতে জাহাজ মালিকরা ক্ষতির সম্মুখীন হবেন।
পূর্বাঞ্চলীয় কার্গোজাহাজ মালিক সমিতির সভাপতি হাজি মো. নাজমুল হোসাইন হামদু জানান, নৌযান মালিকরা দেশের অন্যান্য যানের তুলনায় চার ভাগের এক ভাগ খরচে পণ্য পরিবহন করে থাকেন।
এ খাতে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে দেশের দুই কোটি মানুষ কাজ করছেন। বর্তমানে নৌপথের নাব্য কমে যাওয়ায় কম পণ্য বহন করতে হচ্ছে। তা ছাড়া আয়কর, বালুবাহী স্টিলের নৌকায় অন্য পণ্য পরিবহন, নৌযানে ব্যবহৃত রংসহ বিভিন্ন দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি, নৌপথে চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসীর কারণে মালিকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
নাজমুল হোসাইন হামদু জানান, নৌপরিবহনমন্ত্রী মালিকদের স্বার্থ বিবেচনা না করে নৌযান শ্রমিকদের যে বেতন কাঠামো ঘোষণা করেছেন, তা কোনোভাবেই বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়। এ অবস্থায় শ্রম মন্ত্রণালয়ের শ্রম আইন অনুসারে নৌযান শ্রমিকদের বেতন কাঠামো পুনর্নির্ধারণের দাবি জানানো হয়েছে। তা না হলে তাঁদের ধর্মঘট অব্যাহত থাকবে।