‘মাঝখানে ৫০ টাকার নোট’ বলায় প্রতিবাদ, বৃদ্ধকে পিটিয়ে হত্যা

শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার মির্জাপুর গ্রামে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সাত দিন আগে আশ্রাব আলী সরদার (৬০) নামের এক বৃদ্ধকে পিটিয়ে আহত করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার রাতে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
এ ঘটনায় ভেদরগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ভেদরগঞ্জ থানা পুলিশ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে। আদালত তাঁদের কারাগারে পাঠিয়েছেন।
নিহতের মেয়ে হেনা আকতার ও ভেদরগঞ্জ থানা সূত্রে জানা গেছে, শরীয়তপুর জেলার ভেদরগঞ্জ উপজেলার মির্জাপুর গ্রামের তারা মিয়ার ছেলে রিয়াজ গত বৃহস্পতিবার দুপুরে বাড়ির পাশে মিন্টু সরদারের দোকানে আইসক্রিম খেতে যায়। সেখানে ১০ টাকার আইসক্রিম কিনে ১০০ টাকার নোট দিলে দোকানদার মিন্টু তাকে ৯০ টাকা ফেরত দেন। এ সময় রিয়াজ টাকা না গুনে পকেটে নিলে মিন্টু বলেন টাকা গুনে নিতে। রিয়াজ টাকা গুনে ৪০ টাকা পেয়ে মিন্টুর কাছে বাকি ৫০ টাকা দাবি করে। এর পর মিন্টু দুটি ২০ টাকার নোটের মধ্যে ৫০ টাকার নোট দেখতে বলেন। এ নিয়ে ব্যঙ্গ করে দোকানদার মিন্টু রিয়াজকে বারবার বলতে থাকেন, ‘মাঝখানে ৫০।’ বিষয়টি এলাকায় মিন্টু ছড়িয়ে দেয়। এ বিষয়ে রিয়াজ ও তার পরিবার মিন্টুর কাছে জানতে গেলে গত বৃহস্পতিবার উভয়ের মধ্যে কথাকাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে রিয়াজ ও তার মা রোকেয়া বেগমকে দোকানদার মিন্টু মারধর করেন। এ ঘটনার পর রিয়াজের নানা আশ্রাব আলী সরদার (৬০) ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রতিবাদ করলে মিন্টু ও তাঁর লোকজন তাঁকে বেদম মারধর করেন। স্থানীয় লোকজন আহত আশ্রাব আলী সরদারকে উদ্ধার করে প্রথমে ভেদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করে। তাঁর অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসক ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
গত বুধবার রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বৃদ্ধ মারা যান। এ ঘটনায় নিহতের মেয়ে রোকেয়া বেগম বাদী হয়ে ভেদরগঞ্জ থানায় চারজনকে আসামি করে একটি মামলা করেছেন। পুলিশ আসামি মিন্টু সরদার ও তাঁর বাবা আবদুল হামিদ সরদারকে গ্রেপ্তার করে।
মামলার বাদী নিহতের মেয়ে রোকেয়া বেগম বলেন, ‘মিন্টু ও তার পরিবারের লোকেরা আমার বাবাকে পিটিয়ে হত্যা করেছে। আমার বাবার হত্যাকারীদের বিচার চাই।’
ভেদরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ কবিরুজ্জামান বলেন, বৃদ্ধকে পিটিয়ে আহত করার ঘটনায় ভেদরগঞ্জ থানায় একটি মামলা হয়েছিল। দুজনকে আটক করে আদালতে নেওয়া হয়। আহত ব্যক্তি মারা যাওয়ায় মামলাটি এখন হত্যা মামলায় রূপান্তরিত করা হবে।