আ.লীগ নেতা বাশার রিমান্ডে, রহমের জবানবন্দি
নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুন মামলার প্রধান আসামি নূর হোসেনের অন্যতম সহযোগী আবুল বাশারকে সাতদিনের পুলিশি হেফাজতে নেওয়ার আদেশ দিয়েছেন আদালত। অপরদিকে আরেক আসামি রহম আলী সাত খুনের ঘটনার জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আজ শনিবার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
চারদিন আগে কুমিল্লা থেকে রহম আলীকে গ্রেপ্তার করা হয়। সাতদিনের হেফাজতের দুদিন শেষ হতেই আজ ১৬৪ ধারায় তিনি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
এদিকে গতকাল বিকেলে রূপগঞ্জ থেকে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সহ-প্রচার সম্পাদক আবুল বাশারকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ। নূর হোসেনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে বাশার সিদ্ধিরগঞ্জে সড়ক ও জনপথ বিভাগে দরপত্র নিয়ন্ত্রণ করতেন।
সাত খুন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মামুনুর রশীদ মণ্ডল জানান, এই মামলায় কয়েকজন আসামির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে বাশারের নাম এসেছে। তাই তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের হেফাজতের আবেদন করা হয়েছিল।
এদিকে সাত খুন মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ১৬৪ ধারায় রহম আলী গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন। তিনি নূর হোসেনের চাঁদাবাজ দলের প্রধান ছিলেন। প্রতি মাসে ১০ লাখ টাকা চাঁদা তুলে নূর হোসেনকে দিতে হতো। এই সাত খুনের সাথে রহম আলী তাঁর সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছেন বলে আইনজীবী দাবি করেন।
২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম, তাঁর বন্ধু মনিরুজ্জামান স্বপন, তাজুল ইসলাম, লিটন ও গাড়িচালক জাহাঙ্গীর আলম এবং আইনজীবী চন্দন কুমার সরকার ও তাঁর গাড়িচালক ইব্রাহীম অপহৃত হন। পরে ৩০ এপ্রিল শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ছয়জনের ও ১ মে একজনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় নজরুলের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি ও আইনজীবী চন্দন সরকারের মেয়ের জামাই বিজয় কুমার পাল বাদী হয়ে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা মডেল থানায় দুটি মামলা করেন।
র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) ১১-এর চাকরিচ্যুত তিন কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, মেজর আরিফ হোসেন, কমান্ডার এম এম রানাসহ ১৯ র্যাব সদস্যের মধ্যে ১৮ জন সাত খুনে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দিয়েছেন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৩১ জন গ্রেপ্তার হয়েছেন।
সাত খুন মামলার প্রধান অভিযুক্ত আসামি আওয়ামী লীগ সমর্থিত সাবেক কাউন্সিলর নূর হোসেন এ ঘটনার পর ভারতে পালিয়ে গেলে সেখানকার পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে। বাংলাদেশ সরকার এখনো তাঁকে ফিরিয়ে আনতে পারেনি।