বিয়ের তৃতীয় দিনে হত্যা, স্বামীর মৃত্যুদণ্ডাদেশ

বাগেরহাটে বিয়ের তৃতীয় দিনে স্ত্রীকে গলা কেটে হত্যার দায়ে মো. মাহমুদুল আলম শিকদার (৩৩) নামের এক ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার সকালে বাগেরহাট দায়রা জজ মিজানুর রহমান খান এ আদেশ দেন।
আসামি মাহমুদুল আলম এ মামলায় জামিনে ছাড়া পাওয়ার পর থেকে পলাতক। তিনি বাগেরহাটের মোল্লাহাট এলাকার বাসিন্দা।
নিহত শরিফা বেগম পুতুল বাগেরহাটের মোল্লাহাট উপজেলার উদয়পুর দৈবকান্দি গ্রামের আবু দাউদ শেখের মেয়ে। তিনি ঢাকার ইডেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের সম্মান তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।
মামলার বিবরণ উল্লেখ করে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) শেখ মোহাম্মদ আলী জানান, নিহত পুতুলের বড় বোন সাগরিকা আসামি মাহমুদুলের বড় ভাই শাইকুলের স্ত্রী। আত্মীয়তার সম্পর্কের ফাঁকে মাহমুদুল ও পুতুলের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরিবারের কাউকে না জানিয়ে পুতুল ও মাহমুদ গোপনে বিয়ে করেন। পরে ঘটনা জানাজানি হলে উভয় পরিবার সম্পর্ক মেনে নিয়ে ২০১৩ সালের ১০ মে আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁদের বিয়ে দেন। এই বিয়ের তিন দিন পর ১৩ মে রাতে পুতুলের সঙ্গে অন্য কারো পরকীয়ার সম্পর্ক রয়েছে—এই অজুহাতে পুতুলকে মাহমুদুল চাপাতি দিয়ে হত্যা করে।
মামলার বিবরণে আরো উল্লেখ করা হয়, হত্যার পর রাতেই মাহমুদ কীটনাশক পান করে মোল্লাহাট থানায় গিয়ে স্ত্রী হত্যার কথা পুলিশের কাছে স্বীকার করেন। পুলিশ পরদিন সকালে মাহমুদুলের তালাবদ্ধ ঘর থেকে পুতুলের লাশ ও চাপাতি উদ্ধার করে। এ ঘটনায় পুতুলের বাবা আবু দাউদ শেখ বাদী হয়ে মেয়ের জামাই মো. মাহমুদুল আলমকে আসামি করে মোল্লাহাট থানায় মামলা করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের এ আইনজীবী আরো জানান, এ ঘটনায় একই বছরের ১৩ নভেম্বর মোল্লাহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু সাইদ মোহাম্মদ খায়রুল আনাম আদালতে মাহমুদুলকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করেন। মামলা চলাকালে আসামি মাহমুদুল আলম জামিনে মুক্তি পান। পরে তাঁর অনুপস্থিতিতে মামলার দীর্ঘ কার্যক্রম ও ১৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে তিন বছর পর আদালত এ রায় দেন আদালত।
বাদীপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন পাবলিক প্রসিকিউটর শেখ মোহাম্মদ আলী এবং আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী সমিটির সভাপতি ড. এ কে আজাদ ফিরোজ টিপু।