লাঞ্ছিত শিক্ষককে স্বপদে পুনর্বহালের দাবি নাসিমের

ধর্ম সম্পর্কে কটূক্তির অভিযোগ এনে নারায়ণগঞ্জের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমানের উপস্থিতিতে প্রধান শিক্ষককে কান ধরে ওঠবস করানোর পর আবার তাঁকে চাকরিচ্যুত করানোর ঘটনাকে ‘আরো বড় ধরনের অন্যায়’ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম।
আজ বুধবার রাজধানীর ধানমণ্ডির আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে ১৪ দলের এক সভা শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। এ সময় তিনি লাঞ্ছিত ওই প্রধান শিক্ষককে অবিলম্বে স্বপদে বহালের দাবি জানান।
গত শুক্রবার নারায়ণগঞ্জের বন্দর থানার কল্যাণদী এলাকার পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তের বিরুদ্ধে ধর্ম নিয়ে কটূক্তির অভিযোগ এনে কান ধরে ওঠবস করিয়ে শাস্তি দেন জাতীয় পার্টির স্থানীয় সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান। প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্ত বলেছেন, তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার। ধর্ম নিয়ে কোনো কটূক্তি তিনি করেননি।
এ ঘটনার ভিডিওচিত্র ছড়িয়ে পড়লে সারা দেশে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। শিক্ষকসমাজের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। এ ঘটনায় স্থানীয় সংসদ সদস্য সেলিম ওসমানসহ দোষীদের বিরুদ্ধে শাস্তির দাবিতে দেশের বিভিন্ন স্থানে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ হয়েছে।
এদিকে, গত সোমবার শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে বিদ্যালয় থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। ওই দিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির বরখাস্তের চিঠি পান।
এ ঘটনায় সরকারের বেশ কয়েকজন মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যও দুঃখজনক ও লজ্জাজনক বলে উল্লেখ করে এ বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছেন।
নারায়ণগঞ্জের শিক্ষক লাঞ্ছনার বিষয়টি উল্লেখ করে ১৪ দলের সমন্বয়ক বলেন, ‘একজন সংসদ সদস্য যেভাবে প্রধান শিক্ষককে পাবলিকলি হেনস্তা করেছেন, এটা ক্ষমাহীন অপরাধ। এটা কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়। একজন সংসদ সদস্য হিসেবে তিনি তাঁর মর্যাদাকে রক্ষা করতে পারেন নাই; বরং অন্য সংসদ সদস্যদের মর্যাদা ক্ষুণ্ণ করা হলো।’
এ ব্যাপারে স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরো বলেন, ‘প্রধান শিক্ষককে অপমান করা হলো, অপদস্ত করা হলো- তার পর আবার তাঁর চাকরি চলে গেল। এটা তো আরো বড় অন্যায় হয়েছে। আমরা মনে করি, তাঁকে পুনর্বহাল করা উচিত।’
মোহাম্মদ নাসিম অভিযোগ করেন, বিএনপি সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। বিশ্ব যাদের ঘৃণা করে সেই ইসলায়েলি গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে ষড়যন্ত্র করছেন বিএনপি নেতারা।
এ ছাড়া অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের জন্য পাকিস্তান ও তুরস্কের কঠোর সমালোচনা করেন মোহাম্মদ নাসিম।
ধানের ন্যায্য দাম নিশ্চিত, গণপরিবহনে ভাড়া কমানো ও রমযানে নিত্যপণ্যের দাম স্থিতিশীল রাখতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর প্রতি দাবি জানানো হয় ১৪ দলের সভা থেকে।