‘রোয়ানু’ মোকাবিলায় বাগেরহাটে ১৬ নিয়ন্ত্রণ কক্ষ

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় রোয়ানুর মোকাবিলায় বাগেরহাটে ১৬টি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. সফিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় জেলার সব বিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সভা শেষে রাতে সাংবাদিকদের জানানো হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় জরুরি ভিত্তিতে জেলায় ১৬টি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে। এ ছাড়া সরকারি, আধা-সরকারি সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত কর্মস্থল ত্যাগ না করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জেলার ২৩৫টি সাইক্লোন শেল্টারকে (আশ্রয়কেন্দ্র) প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে দুই লাখ ২৬ হাজার ৫৫৫ জন মানুষ নিরাপদে থাকতে পারবে। এ ছাড়া উপকূলীয় চারটি উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তাদের আজ শুক্রবার সকাল ১০টার মধ্যে উপজেলার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটিকে মিটিং করে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রেড ক্রিসেন্টসহ সব স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠানকে সহযোগিতার জন্য প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া মংলা বন্দরে অবস্থানরত সব জাহাজের পণ্যবোঝাই-খালাস ও পরিবহন কাজ সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে। মংলা বন্দরে অবস্থানরত দেশি-বিদেশি বাণিজ্যিক জাহাজগুলোকে নিরাপদে সতর্ক অবস্থায় রাখার নির্দেশ দিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া মনিটরের জন্য মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ একটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খুলেছে। ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় বাগেরহাটের মংলা, রামপাল, শরণখোলা ও মোরেলগঞ্জ উপজেলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন। সতর্কসংকেত বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে উপজেলাগুলোর সব আশ্রয়কেন্দ্র ও বহুতল ভবন প্রস্তুত রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বাগেরহাটের উপকূলীয় এলাকাজুড়ে বাতাসের তীব্রতাও বেড়ে চলেছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণ-পশ্চিম এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় রোয়ানু উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে। এটি আরো ঘনীভূত হয়ে উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হতে পারে। নিম্নচাপটি মংলা সমুদ্রবন্দর থেকে এক হাজার ১৮৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছে। নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার, যা দমকা ও ঝড়ো হাওয়া আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর প্রভাবে বঙ্গোপসাগর প্রচণ্ড উত্তাল হয়ে উঠেছে।
নিম্নচাপের কারণে মংলা বন্দরকে ৪ নম্বর সতর্কসংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অফিস।
মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল রিয়াজ উদ্দিন আহম্মেদ জানান, ঘূর্ণিঝড় রোয়ানুর কারণে বন্দরে অবস্থানরত দেশি-বিদেশি জাহাজগুলোকে নিরাপদে সতর্ক অবস্থায় রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড়ের বিষয়ে মংলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ আলী প্রিন্স বলেন, ঝড় মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।