গুলশানে ‘হামলাকারীদের’ ছবি প্রকাশ

অস্ত্রধারী পাঁচ তরুণের ছবি প্রকাশ করে সাইট ইন্টেলিজেন্স গ্রুপ দাবি করেছে এরাই ঢাকার রেস্তোরাঁয় হামলাকারী। আইএসের বরাত দিয়ে বিশ্বব্যাপী জঙ্গিতৎপরতা পর্যবেক্ষণবিষয়ক যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েবসাইট তাদের টুইটারে এই ছবিগুলো প্রকাশ করে। তবে এই ছবিগুলোর সত্যতা বাংলাদেশের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা যায়নি।
এর আগে রাজধানীর অভিজাত এলাকা গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারি রেস্তোরাঁয় হামলাকারী নিহত ছয়জনই বাংলাদেশি এবং এদের মধ্যে পাঁচজনকে পুলিশ জঙ্গি হিসেবে আগে থেকেই খুঁজছিল বলে জানিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক।
আজ শনিবার রাজারবাগ পুলিশ লাইনে রেস্তোরাঁয় জিম্মি ঘটনায় প্রতিরোধ গড়তে গিয়ে নিহত পুলিশের সহকারী কমিশনার (এসি) রবিউল ইসলাম এবং বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালাহউদ্দিনের জানাজা শেষে আইজিপি সাংবাদিকদের কাছে এ কথা জানান।
এ কে এম শহীদুল হক বলেন, ‘ছয়জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে পাঁচজন সুস্পষ্টভাবে জঙ্গি। এদেরকে গ্রেপ্তার করার জন্য বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় আমরা অনেক চেষ্টা করেছি। এখানে এসে তারা মারা গেল, এই জঙ্গিরা সবাই বাংলাদেশি।
এ ঘটনায় তথাকথিত ইসলামিক স্টেটের (আইএস) দায় স্বীকার করলেও বিষয়টি এখনো নিশ্চিত নয় বলে মন্তব্য করেন আইজিপি। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আইএস তো সব সময় দায় স্বীকার করে।
আমেরিকায় একটি ঘটনায় ৫০ জন মারা গেল, সেখানেও তারা দায় স্বীকার করে। দায় স্বীকার যে করে সেই লিংকটা আমরা খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি।’
জানাজা শেষে সাংবাদিকদের কাছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, জঙ্গিরা ছক এঁকেই হামলায় অংশ নিয়েছিল।
হামলার নিন্দা জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, ‘দেশে নাশকতা সৃষ্টির যে নীলনকশা তার অংশ হিসেবেই এই হামলা করেছে জঙ্গিরা।’
গতকাল শুক্রবার রাতে রাজধানীর গুলশান-২ নম্বর সেকশনের স্প্যানিশ রেস্তোরাঁ হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা। সেখানে তারা দেশি-বিদেশিদের জিম্মি করে রাখে। সন্ত্রাসীদের প্রতিরোধ করতে গিয়ে রাতেই নিহত হন বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন এবং গোয়েন্দা বিভাগের সহকারী কমিশনার রবিউল ইসলাম। এ ছাড়া এ সময় আহত হয় অর্ধশতাধিক পুলিশ কর্মকর্তা।
আজ সকালে জিম্মিদের উদ্ধারে অভিযান চালায় যৌথ বাহিনী। অভিযান শেষে ঢাকা সেনানিবাসে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মিলিটারি অপারেশনসের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাঈম আশফাক চৌধুরী জানান, গুলশানের হলি আর্টিজান থেকে ২০ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তাঁদের সবাইকে গতকাল শুক্রবারই রাতেই ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যা করা হয়। অভিযানে সাত সন্ত্রাসীর মধ্যে ছয়জন নিহত হয়।
গত শুক্রবার রাতে সাইটের টুইটার অ্যাকাউন্টেই রাজধানীর গুলশানে হলি আর্টিজান বেকারি রেস্তোরাঁয় জিম্মি ঘটনার কিছু বীভৎস ছবি প্রকাশ করা হয়। এ ছাড়া আজ শনিবার সকালে আইএসের মুখপাত্র হিসেবে পরিচিত আমাক ম্যাগাজিনের টুইটারের ছবি প্রকাশ করেছিল সাইট। তবে ছবিগুলো যে আর্টিজান বেকারি রেস্তোরাঁরই তা নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি।
এদিকে শুক্রবার রাতে হামলার ঘণ্টা কয়েক পরই দায় স্বীকার করে আইএস। আমাকের বরাত দিয়ে ওই খবর প্রথম জানিয়েছিল সাইট ইন্টেলিজেন্সই। এমনকি তখন ২০ জনকে হত্যার কথাও উল্লেখ করা হয়। এরপর শনিবার সকালে যৌথ বাহিনীর অভিযানে ঠিক ২০ জনের মৃতদেহই উদ্ধার করা হয়।